বন বিভাগের গাছ কেটে দোকানঘর নির্মাণ, নীরব প্রশাসন
- ২৫ জুলাই ২০২৫, ১৫:০৪
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধের ঢালে বন বিভাগের সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের গাছ কেটে দোকানঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। বন বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এসব দোকান ঘর নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে দায়সারা বক্তব্য দিয়েছেন দুই দপ্তরের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, ধুলাসার ইউনিয়নের ধোলাই মার্কেট সংলগ্ন বেড়িবাঁধের ঢালে উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় বন বিভাগ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করে। এই বৃক্ষরোপণের মূল উদ্দেশ্য টেকসই বেড়িবাঁধ গড়ে তোলা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে উপকূলীয় এলাকা রক্ষা করা। কিন্তু সম্প্রতি ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি গাছ কেটে দোকানঘর নির্মাণ শুরু হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী রাকিব হাওলাদার, রবিউল মোল্লা, আব্দুল জলিল আকন, মহিম হাওলাদার ও আব্দুর রশিদ হাওলাদার এসব গাছ কেটে বেশ কয়েকটি দোকানঘর নির্মাণ করছেন। এসব ঘর ভাড়া দিতে চুক্তির প্রস্তুতিও চলছে বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগ ও পাউবোকে অবহিত করা হলেও অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে কোনো ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
স্থানীয় এক বাসিন্দা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, ‘প্রতি বছর ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের মানুষ বিপন্ন হয়। আমাদের রক্ষায় সরকার যে বন তৈরি করেছে, তা ধ্বংস করে দোকানঘর গড়া অত্যন্ত দুঃখজনক।’
এ বিষয়ে বন বিভাগের গঙ্গামতি বিট কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বেড়িবাঁধে আমাদের রোপণকৃত গাছের মধ্যে দোকানঘর নির্মাণে বাধা দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের বাধা উপেক্ষা করে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।’
বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
পাউবো কলাপাড়া সার্কেলের ওয়ার্ক অ্যাসিস্ট্যান্ট তারিকুজ্জামান তুহিন বলেন, ‘ফোনে স্থানীয় এক ব্যক্তি আমাকে দোকানঘর নির্মাণের বিষয়টি জানিয়েছেন। আমরা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, এই সবুজ বেষ্টনী শুধু প্রকৃতির ভারসাম্য নয়, বরং তাদের জীবনের নিরাপত্তার সাথেও সরাসরি জড়িত। বন উজাড় করে দোকানঘর নির্মাণের এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে কুয়াকাটার পরিবেশ ও জনগণের জীবন-জীবিকা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। তারা দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।