টাইগার ব্যাটারদের যাচ্ছে-তাই ব্যাটিংয়ে বাংলাওয়াশ এড়াল পাকিস্তান
- ২৫ জুলাই ২০২৫, ১২:০৫
পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশের লজ্জায় ফেলার সম্মুখ সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে টাইগার ব্যাটারদের যাচ্ছে-তাই ব্যাটিংয়ে উল্টো লজ্জার রেকর্ড গড়ার শঙ্কা জেগেছিল। অবশ্য মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও নাসুমের ২৪ রানের জুটিতে সেই বিপদ এড়ায় টাইগাররা। শেষদিকে সাইফউদ্দিন ও তাসকিন রান ব্যবধান কমালেও বড় পরাজয়ের এড়ানো যায়নি।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) মিরপুরে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। জবাবে ১০৪ রানেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এই জয়ে ২-১ ব্যবধানে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষ করল দ্য গ্রিন ম্যানরা।
রান তাড়ায় দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সালমানের বলে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দেন তানজিদ। শূন্য রানে ফেরেন এই ওপেনার। অধিনায়ক লিটনও দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। প্রথম দুটি টি–টোয়েন্টিতে ১ ও ৮ রান করে আউট হওয়া লিটন আজ ৮ রান করে ফেরেন।
ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া মিরাজ জোড়া বাউন্ডারি হাঁকানোর পরই ফেরেন। এদিন আক্রমণাত্মক মেজাজেই ব্যাটিং করে যেতে চেয়েছিলেন। তবে ফাহিমের বলে আব্বাস আফ্রিদির হাতে ধরা পড়েন।
এরপর এক বল ব্যবধানে আগের ম্যাচের দুই নায়ক জাকের আলী ও মেহেদী হাসানকে ফেরান সালমান মির্জা। জাকের অবশ্য রানের খাতা খুলেছিলেন, কিন্তু মেহেদী ‘ডাক’ মেরেছেন।
এরপর শামীমও উইকেটে থিতু হতে পারেননি। পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান বলে বোল্ড হন এই অলরাউন্ডার। অফ সাইডে বড় শট খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল ব্যাটের কিনারে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলেন নাঈম শেখ। তবে নিজের ইনিংস রাঙাতে ব্যর্থ এই ওপেনার। ১৭ বল মোকাবিলায় মাত্র ১০ রান করে ফেরেন তিনি। ইনিংসে নেই একটি বাউন্ডারিও!
এরপর নাসুমও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তালাতের বলে ধরা পড়েন দানিয়ালের হাতে। তবে আউট হওয়ার আগে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের সঙ্গে ২৪ রানের জুটি গড়েন নাসুম। ইনিংসে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি।
এতে বাংলাদেশের টি–টোয়েন্টি ইতিহাসে দলীয় সর্বনিম্ন ৭০ রানের কমে অলআউট হওয়ার শঙ্কা জেগেছিল। তবে সেই শঙ্কা থেকে মুক্ত হয় বাংলাদেশ। শেষদিকে ব্যবধান কমান মোহাম্মদ সাইফউদিইন ও তাসকিন আহমেদ।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই টাইগার বোলারদের ওপর তান্ডব চালাতে থাকেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার সাহিবজাহা ফারহান ও সাঈম আইয়ুব। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে পাওয়ার প্লেতেই দলীয় হাফ-সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলে সফরকারীরা। এতে ৬ ম্যাচ পর আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে ৫০ ছাড়ায় পাকিস্তান।
অবশ্য এরপরই উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। অষ্টম ওভারে সাইমকে ফিরিয়ে দলকে প্রথম উইকেট এনে দেন নাসুম আহমেদ। এতে ভাঙে তাদের ৮২ রানের জুটি। ১৫ বলে ২১ রান করা এই ওপেনার ডিপ স্কোয়ার লেগে শামীমের মুঠোবন্দি হন।
এরপর ঝড় তোলা ফারহানকেও ফেরান নাসুম। ৪১ বলে ৬৩ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই ওপেনার। ৬ চারের ৫ ছক্কা মেরেছেন তিনি।
ব্যাট হাতে নেমে ব্যর্থতার বৃত্তেই কাটা পড়েন 'জীবন' পাওয়া মোহাম্মদ হারিস। তাসকিনের বলে ডিপ থার্ডম্যানে নাসুমের হাতে ক্যাচ দেন টপ-অর্ডার এই ব্যাটার। ১৪ বল মোকাবিলায় মাত্র ৫ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। তিন ম্যাচ মিলিয়েও দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি এই ব্যাটার। ৪, ০, ৫—তিন ম্যাচে মাত্র ৯ রানই করতে পেরেছেন বাংলাদেশের পাকিস্তান সফরের শেষ ম্যাচে দারুণ এক সেঞ্চুরি ছোঁয়া হারিস।
এরপর দলীয় ১৩১ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় পাকিস্তান। মেহেদীর দারুণ এক ক্যাচে প্যাভিলিয়নে ফেরেন হাসান নেওয়াজ। ৩ ছক্কায় ১৭ বলে ৩৩ রান করেছেন হাসান।
এরপর হুসেইন তালাতকে (৪ বলে ১) উইকেটকিপার লিটন দাসের হাতে ক্যাচ বানিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু এনে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও প্রায় ৯ বছর পর ফের দেড় শ' ছুঁয়ে যায় পাকিস্তান। মিরপুরে এই সংস্করণে চতুর্থবার ১৫০ পেল দলটি। সর্বশেষ ২০১৬ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৫১ রান করেছিল পাকিস্তান।
শেষ ওভারে জোড়া উইকেটের দেখা পান তাসকিন। মোহাম্মদ নেওয়াজকে ফেরানোর পর ফাহিম আশরাফকেও ফেরান এই পেসার। এতে ১৮০ স্পর্শ করেনি পাকিস্তানের দলীয় সংগ্রহ।