বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিরোধ দিবস: ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ বিইউবিটি শিক্ষার্থীদের
- ২৩ জুলাই ২০২৫, ২১:৩৯
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে রাজধানীর হাতিরঝিলে উদ্যাপিত হয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিরোধ দিবস। দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী, ড্রোন শো, কনসার্ট ও আলোচনা সভা। তবে অনুষ্ঠানের শেষ দিকে প্রদর্শিত ডকুমেন্টারি ঘিরে উঠেছে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, ডকুমেন্টারিতে আন্দোলনের সূচনালগ্ন ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ভিডিওতে বলা হয়েছে—১৭ জুলাই ২০২৪ ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের সূচনা হয়। কিন্তু বাস্তবে এই তথ্য সঠিক নয়।
বিইউবিটি শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, ১৬ জুলাই ২০২৪ তারিখে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে আন্দোলনের সূচনা হয় বিইউবিটি থেকেই। সেদিন সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী মিরপুর-১০ গোলচত্বর অবরোধ করে কোটাবিরোধী স্লোগান দিতে শুরু করেন। তখন তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরে পুলিশি সহযোগিতায় হামলাকারীরা বিইউবিটির রূপনগরস্থ স্থায়ী ক্যাম্পাসেও হামলা চালায়, যা প্রতিহত করেন শিক্ষার্থীরা।
এই ঘটনার পর বিইউবিটির সঙ্গে যোগ দেন বিইউপি, এমআইএসটি ও মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থী। দিনব্যাপী সংঘর্ষে আহত হন অন্তত দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে একাধিক মামলায় প্রায় ১৫০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এছাড়া, পরবর্তী কর্মসূচিগুলোতেও বিইউবিটির শিক্ষার্থীরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
বিইউবিটি আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, কোটাবিরোধী ও স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে শহীদ হন বিইউবিটির শিক্ষার্থী তাহমিদ আবদুল্লাহ ও সুজন মাহমুদ মিথি। তাদের ত্যাগ এবং বিইউবিটির নেতৃত্ব উপেক্ষা করে তৈরি করা ডকুমেন্টারিকে ইতিহাস বিকৃতি হিসেবে দেখছেন শিক্ষার্থীরা।
দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, 'আমরা আন্দোলনের কৃতিত্ব দাবি করি না, কিন্তু সত্য ইতিহাস সংরক্ষণের দাবি করি। জুলাইয়ের স্পিরিট হলো সম্মিলিত সংগ্রাম, সেটিকে বিকৃত করে কিছু নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতিত্ব তুলে ধরার চেষ্টা চলছে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করবে।'
তারা আরও বলেন, ইতিহাসকে বিকৃত না করে সব অংশগ্রহণকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান যথাযথভাবে তুলে ধরার মাধ্যমে একটি সঠিক ও ঐতিহাসিক নথি তৈরি করা জরুরি। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে—এই দাবি জানান তারা।