ডিআইইউ

আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড—দুই মাসে নিভে গেল ৩ প্রাণ

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি © সংগৃহীত

মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) হারিয়েছে তিন শিক্ষার্থীকে। ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপট হলেও তিনটি ঘটনারই পরিণতি মর্মান্তিক মৃত্যু। আত্মহত্যা, রহস্যজনক মৃত্যু ও সড়ক দুর্ঘটনায় নিভে গেছে তিনটি জীবন; কাঁদিয়েছে পরিবার, বন্ধু ও সহপাঠীদের।

১৮ জুলাই রাজধানীর বাড্ডার ছাপড়া মসজিদের পাশে একটি ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ইংরেজি বিভাগের ৩৬তম ব্যাচের এক ছাত্রীর মরদেহ। তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে একটি সুইসাইড নোটে তিনি লেখেন, ‘বাবা, আমাকে মাফ করে দিও। আমার কাছে একজন কিছু টাকা পায়—তাকে টাকা দিয়ে দিও।’

গত ১৩ জুন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নূরজাহানপুর এলাকায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার (২৪)। দুর্ঘটনাটি ঘটে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে। একটি সম্ভাবনাময় জীবন নিভে যায় মুহূর্তেই।

এ ছাড়া গত ১৯ মে নিখোঁজ থাকার চার দিন পর উত্তরা দিয়াবাড়ি এলাকার মেট্রোরেল লাইনে পিলারের নিচে পাওয়া যায় ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসানের (২৪) রক্তাক্ত মরদেহ। মরদেহে ছিল স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন। এটি দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

আরও পড়ুন: ৫ মাস পর শিক্ষকবিহীন শ্রেণিকক্ষে ফিরেছেন কুয়েটে শিক্ষার্থীরা

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে শিক্ষার্থীদের হারানো আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। আমাদের মেডিকেল সেন্টার ও চিকিৎসক রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা যদি তাদের সমস্যাগুলো কাউন্সিলর বা শিক্ষকদের সঙ্গে শেয়ার করে, তাহলে আমরা দ্রুত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা নিতে পারি।’

তিনি আরও জানান, মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে।

ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা মোহাম্মদ শাহ আলম চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক বিষয়ে সচেতন করতে সেমিনার ও ইয়োগা কর্মসূচির পরিকল্পনা চলছে। তবে শিক্ষার্থীদেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন, কারণ মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে তারা নিজেরাও সমস্যাগুলো প্রকাশ করতে চান না।

শিক্ষার্থীরা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত আরও সক্রিয় ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করা। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথাবার্তা যেন শুধু বার্তায় না থাকে, বাস্তব কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়।