ভুয়া পরিচয়ে নাগরিকত্ব, কুয়েতে হাজারো পাসপোর্ট বাতিল

কুয়েত
কুয়েত © সংগৃহীত

কুয়েতে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নাগরিকত্ব জালিয়াতির ঘটনার পর ১,০৬০ জনেরও বেশি মানুষের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে দেশটির সরকার। দীর্ঘমেয়াদি তদন্তে পরিচয় জালিয়াতির চক্র এবং ভুয়া নথিপত্রের মাধ্যমে কুয়েতি পাসপোর্ট নেওয়ার ঘটনা উদঘাটিত হয়েছে। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেয় কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয়তা তদন্ত বিভাগ এবং নাগরিকত্ব বিষয়ক সর্বোচ্চ কমিটি।

গালফ নিউজের প্রতিবেদনে স্থানীয় দৈনিক আল রাইয়ের বরাতে বলা হয়েছে, বহু ব্যক্তি ভুয়া পরিচয়, মিথ্যা পারিবারিক সম্পর্ক এবং অবৈধভাবে দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন—যা কুয়েতি আইনে দণ্ডনীয়।

তদন্তের সময় পুরোনো একটি মামলাও পুনরায় আলোচনায় আসে। ১৯৫৬ সালে জন্ম নেওয়া এক ব্যক্তি উপসাগরীয় অন্য একটি দেশের নাগরিক হয়েও ২০০৬ সালে কুয়েতি নাগরিক হিসেবে পরিচয় দেন। তার নামে ৪৪ জন সন্তান ও ১২২ জন নির্ভরশীল সদস্য সরকারি রেকর্ডে যুক্ত হন। কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা যায়, তাদের অনেকের সঙ্গেই কোনো জেনেটিক সম্পর্ক নেই। এর ফলেই শুরু হয় ব্যাপক নাগরিকত্ব বাতিলের প্রক্রিয়া।

আরেক বিস্ময়কর ঘটনায় জানা যায়, ১৯৪০ সালে মারা যাওয়া এক ব্যক্তির নামে অবৈধভাবে ৪৪০ জন নাগরিকত্ব নিয়েছেন। এই একটি মামলায় সবগুলো নাগরিকত্ব একসঙ্গে বাতিল করে দেয় কমিটি।

সর্বশেষ বৈঠকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পর্যালোচনার পর প্রায় ৭০০ জনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে ১৬ জনের বিরুদ্ধে উপসাগরীয় বা আরব দেশগুলোর দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার অভিযোগও প্রমাণিত হয়।

কুয়েতি কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি নাগরিকত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে পুঙ্খানুপুঙ্খ নথিপত্র ও প্রমাণের ভিত্তিতে। দেশটির ইতিহাসে এটি নাগরিকত্ব জালিয়াতি দমনে সবচেয়ে বড় ও নজিরবিহীন অভিযান হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

সরকার জানায়, যেসব ব্যক্তির নাগরিকত্ব বাতিল হয়েছে, তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের আইনি অবস্থান নিয়েও শিগগিরই পর্যালোচনা শুরু করা হবে।