জামায়াতের সমাবেশ
রাজধানীতে বাড়ানো হয়েছে পুলিশ–র্যাবের নজরদারি, রয়েছে ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক
- টিডিসি রিপোর্ট
- ২০ জুলাই ২০২৫, ১২:১৫
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার (১৯ জুলাই) অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ। এ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীরা দলে দলে রাজধানীতে আসতে শুরু করেছেন। দলটির পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, সমাবেশে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের অংশগ্রহণ ঘটবে।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে মূল নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, রাজধানীতে অতিরিক্ত চার হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের পাশাপাশি মাঠে রয়েছে র্যাব-ডিবির কয়েক হাজার সদস্য। সমাবেশ ঘিরে রাজধানীতে নিরাপত্তার ঘাটতি নেই বলেই জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এম নজরুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ ঘিরে ঢাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোথাও যেন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য পুরো শহরেই পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।’

ডিএমপির যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (অপারেশন) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সমাবেশ ঘিরে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য নিয়োগের পাশাপাশি থানা ও ফাঁড়ির সদস্যরাও নগরবাসীর নিরাপত্তায় কাজ করছেন। ডিএমপির আটটি ট্রাফিক বিভাগও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরাও মাঠে কাজ করছেন।’
র্যাবও রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করেছে। এলিট বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব জানান, ‘সমাবেশস্থলের চারপাশে র্যাব সদস্যরা মোতায়েন রয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য অবস্থান করছেন। যদি কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়, র্যাব তা দমন করতে প্রস্তুত রয়েছে।’
র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা আরও আগে থেকেই শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সমাবেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজেদের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাঠের ভেতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আটটি বিভাগীয় ইউনিটের অধীনে কাজ করছেন প্রায় ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক। তাদের পাশাপাশি শৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত আরও দুই হাজার নেতাকর্মী বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্ব পালন করছেন, সব মিলিয়ে সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় আট হাজার।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সমাবেশস্থলের ২০টি পয়েন্টে ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকার বাইরে থেকে যারা আসছেন, তাদের জন্য ১৫টি পার্কিং পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। সারাদেশ থেকে রাজধানীতে মানুষের ঢল নামবে আজ।’

সমাবেশস্থলে স্বেচ্ছাসেবকদের পাশাপাশি মনিটরিং সেল গঠন করেছে দলটি। আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে স্থাপন করা হয়েছে একাধিক পর্যবেক্ষণ ইউনিট।
শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা জামায়াত নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ আমানুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের আট হাজার নেতাকর্মী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন পয়েন্টে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং রাস্তাঘাট চিনিয়ে দেওয়ার কাজ করছেন। এতে কোনো যানজট সৃষ্টি হচ্ছে না। কেউ সন্দেহজনক কিছু সঙ্গে নিয়ে ঢুকছে কি না, সেটিও দেখছি। তবে কারও কোনো ভোগান্তি হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কারও ব্যাগ সন্দেহজনক মনে হয়, আমরা কেবল উপর থেকে পর্যবেক্ষণ করছি। কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।’
এদিকে, সমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল রাত থেকেই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত শুরু করেছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। আজ সকাল থেকে শাহবাগ ও তার আশপাশের এলাকায় দেখা গেছে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি। সেখানকার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবকরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেও জামায়াত কর্মীদের অবাধে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বহিরাগতদের অবস্থান এবং ছোট ছোট দলে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। ক্যাম্পাস অভিমুখী কয়েকটি রোড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শাহবাগ থেকে যেসব গাড়ি ঢুকে, সেগুলো কেবল ঢাকা মেডিক্যাল রোড হয়ে বের হতে পারছে। টিএসসি থেকে কার্জন হল বা হাইকোর্টের দিকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।