অমর একুশে হল

প্রভোস্টকে ‘স্বৈরাচারের দালাল’ আখ্যা দিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাসে পোস্টারিং

ঢাবি ক্যাম্পাসে পোস্টারিং
ঢাবি ক্যাম্পাসে পোস্টারিং © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অমর একুশে হলের প্রভোস্ট ও আওয়ামীপন্থী নীল দলের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইসতিয়াক এম. সৈয়দকে ‘স্বৈরাচারের দালাল’ আখ্যা দিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারিং করেছেন একদল শিক্ষার্থী। সম্প্রতি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে অমর একুশে হল, ফজলুল হক মুসলিম হল, কার্জন হল, হাকিম চত্বর, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি, ডাকসু ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, কলাভবন, শ্যাডো, এফবিএস, রেজিস্ট্রার ভবনসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় এসব পোস্টারিং করা হয়।

অমর একুশে হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অধ্যাপক ড. ইসতিয়াক এম. সৈয়দ গত বছরের ৩ জুলাই ছাত্রদের আন্দোলনকে ‘সন্ত্রাসী আন্দোলন’ আখ্যা দিয়ে সেটার বিচারের দাবিতে নীল দলের করা বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাছাড়া ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে কারচুপি নিয়ে অভিযোগের কথা জিজ্ঞেস করতে গেলে উনি বলেছিলেন, ‘আমি কি ছাত্রলীগের বাইরে?’

হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গত ৫ আগস্টের আগেও তিনি আওয়ামী দোসর ছিলেন। ৫ আগস্ট পরেও একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছেন। হলে একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে আলাদা সুবিধা দিচ্ছেন। আমরা যারা কোন রাজনীতির সাথে যুক্ত নয় আমাদের জন্য আলাদা করে নিয়ম তৈরি করেছে এবং তার কাছের শিক্ষার্থীদের জন্য কোন নিয়ম নেই।

এই শিক্ষক জুলাই আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন। ৫ আগস্টের পরও তিনি স্বপদে বহাল আছেন, পরবির্তন করেনি ঢাবি প্রশাসন

জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. ইসতিয়াক এম. সৈয়দ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গত ১০ জুলাইয়ের পর থেকে‌ই আমাদের হলে নতুন শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ দিয়েছি। সিট বরাদ্দ নীতি অনুযায়ী সেজন্য আগের সেশনের যাদের মেয়াদ শেষ সেই অনুযায়ী সিট ছেড়ে দিতে হচ্ছে। তাই কিছু শিক্ষার্থী সিট না ছেড়ে রাতের আঁধারে আমার বিরুদ্ধে পোস্টারিং করেছে। 

তিনি বলেন, আমাদের দুয়েকটি জায়গায় সিট বরাদ্দ দিতে গিয়ে একটু ভুল হয়েছে। পরবর্তীতে সেগুলো আবার ঠিক করা হয়েছে‌। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরাই হলের আশেপাশের পোস্টারগুলো ছিঁড়ে ফেলেছে। আমি শিক্ষার্থীদের সাথে সাধারণ সভা করে নতুন শিক্ষার্থীদের সিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষার্থীরা এটাকে সাধুবাদ জানিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি মাস্টার্সের রানিং শিক্ষার্থী। কিন্তু আমার সিটে অন্য আরেক শিক্ষার্থীকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাপারে স্যারের সাথে কথা বললেও তিনি আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। আমার সামনে পরীক্ষা। আমি এই বিষয়ে স্যারকে অনেক রিকোয়েস্ট করেছিলাম। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। পরবর্তীতে আমি এই নিয়ে একটি পোস্টের কমেন্ট বললে তিনি হাউজ টিউটর স্যারকে দিয়ে আমাকে পোস্ট ডিলিট করতে বলেন‌। 

আরেকজন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমার অনেক ব্যাচমেটরাই অন্যান্য হলে থাকছে। এই মুহূর্তে আমরা কোথায় যাবো। অথচ স্যারের বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী যাদের মাস্টার্সের রেজাল্ট হয়েছে তারা হলে থাকছে। তাছাড়া রাজনৈতিক কিছু নেতারাও হলে অবস্থান করছে যাদের মেয়াদ শেষ। তাদের সিটে কাউকে বরাদ্দ দেওয়া হয়নি‌।