পরকীয়ার ফাঁদে ফেলে ২১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে

প্রতীকী
প্রতীকী © সংগৃহীত

রাজধানীর এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নিজের বোনের জেঠাশ্বশুরের সঙ্গে পরকীয়া করে প্রতারণার মাধ্যমে ২১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গত ৯ জুন (মঙ্গলবার) প্রতারণার শিকার ব্যক্তির সহধর্মিণী শাহানারা পারভীন বগুড়া জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ‘ক’ অঞ্চল আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৭/১১৭ ধারায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তের বাড়িতে টাকার কথা বলতে গিয়ে হুমকি ও হামলার পরিস্থিতিতে পড়েন তিনি।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী, শাহানারা পারভীন একজন আইন মান্যকারী সহজ-সরল গৃহিণী। পক্ষান্তরে প্রতিপক্ষরা অন্যায়কারী, অর্থ আত্মসাৎকারী এবং প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করা।

অভিযোগে বলা হয়, ১নং প্রতিপক্ষ রহিমা আফরোজ রুহী, প্রতারক চক্রের সহায়তায় শাহানারার স্বামী মোস্তাফিজার রহমানের নিকট হতে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন তারিখে ব্যাংক হিসাব ও বিকাশের মাধ্যমে মোট ২১,০০,০০০ (একুশ লক্ষ) টাকা হাতিয়ে নেন।

এ ঘটনা জানার পর, ৯ জুন (মঙ্গলবার), ২০২৫ তারিখ সকাল ১০টায় শাহানারা পারভীন তার স্বামী এবং সাক্ষীদের নিয়ে ১নং প্রতিপক্ষের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তুললে, প্রতিপক্ষরা উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। এরপর তারা লাঠি, বাটাম, ডাল, লোহার রড ও ছুরিসহ সজ্জিত হয়ে মারার জন্য এগিয়ে আসেন।

আরও পড়ুন: প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা, পরীক্ষা চার বিষয়ে

শাহানারা পারভীন তখন ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করতে থাকেন এবং ৫নং সাক্ষীর ঘরে ঢুকে আত্মরক্ষা করেন। চিৎকার শুনে স্থানীয় সাক্ষীরা এগিয়ে এলে প্রতিপক্ষরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষরা বলেন, ‘আজ বেঁচে গেলেও পরে সুযোগ মতো খুন করে লাশ গুম করব, বাড়িতে আগুন দেব, মিথ্যা মামলায় জেল খাটাবো, বাইরে বের হতে দিবো না।’

এই হুমকির ফলে শাহানারা পারভীন এবং তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। তিনি আদালতের কাছে প্রতিপক্ষদের ফৌঃ কাঃ বিঃ ১০৭/১১৭ ধারায় মুচলেকায় আবদ্ধ করার আবেদন জানান।

অভিযোগকারীর নাম মোছাঃ শাহানারা পারভীন। তিনি বগুড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার রহমান নগর এলাকার বাসিন্দা এবং মোঃ মোস্তাফিজার রহমানের সহধর্মিণী। অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন, তারা হলেন- মোছা. রহিমা আফরোজ রুহী (২৫), মোছা. আলেয়া (৫৪), মোছা. তারা মিয়া (৬৫) এবং মো. আলামিন (৩০)। এদের মধ্যে ১নং প্রতিপক্ষ রহিমা আফরোজ রুহীর বিরুদ্ধেই মূলত প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাত এবং হুমকির অভিযোগ। মামলায় সাক্ষী হিসেবে নাম উল্লেখ করা হয়েছে: প্রার্থিনী নিজে, মোঃ তাজুল মেম্বার, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোছাঃ মাহিশা ফাওমিদা নিশা এবং মোঃ আগবর আলী সহ আরও অনেক স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীর কথাও উল্লেখ রয়েছে।

অভিযোগকারীর মেয়ের সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, এই বিষয়ে অবগত হয়ে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্ত পক্ষ কোনো আগ্রহ দেখায়নি। ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রমাণাদিও রয়েছে বলে দাবি করেন।

অভিযুক্ত মেয়ের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।

সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সৈকত হাসান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, যে ধারায় মামলা হয়েছে, তা আমাদের কাছে আসবে না। আদালত নিজে তা দেখে থাকেন।