ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স-এ জুলাই স্মরণে ‘শিকল-পরা ছল’ অনুষ্ঠান 

জুলাই স্মরণে ‘শিকল-পরা ছল’ অনুষ্ঠান 
জুলাই স্মরণে ‘শিকল-পরা ছল’ অনুষ্ঠান  © টিডিসি ফটো

ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স-এ “শিকল-পরা ছল” শিরোনামে আয়োজন করা হয় জুলাই স্মরণ অনুষ্ঠান ২০২৫। এই অনুষ্ঠান ছিল ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক “জুলাই গণ-অভ্যুত্থান”-এ অংশগ্রহণকারী সাহসী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের এক অনন্য উদ্যোগ।বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) এটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার, পিএসসি (বিএন) (অব.), সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর এসএম নাহিদুল ইসলাম (বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট), অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর শেখ বুলান্দ তাসলিম (ইইই বিভাগ), এবং সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর ও অতিরিক্ত পরিচালক (কমিউনিকেশন ও ব্রান্ডিং) এইচএম আতিফ ওয়াফিক। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী রেজিষ্ট্রারার আবুল কালাম আজাদ এবং অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ওসমান গনি হাদী জানান, তিনি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘জুলাই আন্দোলন ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক প্রতিবাদ। এটি সমতা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নকে নতুনভাবে সামনে আনে।’ তার মতে, সচেতন নেতৃত্ব ও ছাত্র-ছাত্রী সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন সম্ভব ছিল না।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জুলাই আন্দোলনের আহত ও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী সাহসী ছাত্র-ছাত্রীরা, যারা তাদের ত্যাগ ও অভিজ্ঞতার হৃদয়বিদারক চিত্র তুলে ধরেন।
বিশেষভাবে বক্তব্য দেন- সিএসই বিভাগের গুলিবিদ্ধ আহত ছাত্র আবু সুফিয়ান মো. রইচ উদ্দিন, সিএসই বিভাগের গুলিবিদ্ধ আহত একটি চোখ হারানো ছাত্র মো. তানভির হাসান রিয়াদ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গুলিবিদ্ধ আহত ছাত্র মো. হান্নান, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রিশন ডিপার্টমেন্টের গুলিবিদ্ধ আহত ছাত্রী ইশরাত জাহান ঈশা।

তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা শ্রোতাদের আবেগাপ্লুত করে এবং আন্দোলনের নির্মম বাস্তবতা উপস্থিত সবাইকে গভীরভাবে নাড়া দেয়।

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের এই সাহসিকতা ও আত্মত্যাগ আমাদের গৌরবের অংশ। জুলাই ২৪-এর আন্দোলনে তাদের ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ তিনি সকল ছাত্র-ছাত্রীদের এসব ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান ।

ট্রেজারার ক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার বলেন, ‘এই সাহসী সন্তানদের প্রতি আমাদের গভীর সহানুভূতি ও শ্রদ্ধা। তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে সফলতা কামনা করছি।’

সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট প্রফেসর এইচএম আতিফ ওয়াফিক আন্দোলনের সময়কার অভিজ্ঞতা স্মরণ করে আবেগ ভরে বলেন, ‘তাদের সহ্য করা নির্যাতন ও আত্মত্যাগ কোনোভাবেই ভুলে যাওয়ার নয়। আমি সেই সময় তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’

অনুষ্ঠানটি পরিকল্পনা ও তদারকি করেন সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ ও এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স কর্মকর্তা) মো. আবুল বাশার এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের বিবিএ ছাত্রী ইশরাত জাহান ঈশা।

এই আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা ইতিহাসের এক বেদনাবিধুর অধ্যায়কে স্মরণ করেন এবং শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চেতনা ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে আরও দৃঢ় ও প্রজন্মান্তরের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ী হিসেবে চিহ্নিত করেন।