ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে বক্তৃতা
বাংলা সাহিত্যের অনুবাদ প্রসারে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ বাড়ানোর তাগিদ
- টিডিসি রিপোর্ট
- ১৮ জুলাই ২০২৫, ১৭:৪৩
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে ‘৭ম নেহরীন খান স্মৃতি বক্তৃতা’ অনুষ্ঠানে “লিটারেরি ট্রান্সলেশন এন্ড ট্রাস্লেটরস: বাংলাদেশ এন্ড বিয়ন্ড” শিরোনামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিয়াজ জামান সাহিত্যে অনুবাদ এবং অনুবাদকের গুরুত্ব নিয়ে গবেষণাধর্মী বক্তব্য তুলে ধরেন।
বুধবার (১৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুর এলাহী অডিটোরিয়ামে এ বক্তৃতা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৫ সালে একুশে পদক প্রাপ্ত শিক্ষাবিদও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ডক্টর নিয়াজ জামান এই অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ছিলেন।
অধ্যাপক জামান তার বক্তৃতায় বলেন, ‘অনুবাদকরা দীর্ঘদিন সাহিত্যিক হিসেবে স্বীকৃত ছিলেন না। ১৯৭০ সালের পর থেকে অনুবাদকে সৃজনশীল কাজ এবং এই কাজের জন্য অনুবাদকগণ পুরস্কৃত হতে পারেন বলে স্বীকৃতি দেয়া শুরু হয়। ২০২০ সালের পেন আমেরিকার সম্মেলনে অনুবাদকদের জন্য যথাযথ সম্মানী, কপিরাইট এবং লেখকের মতো অনুবাদকের নামও গুরুত্বের সাথে প্রকাশের বিষয়টি ইশতেহার আকারে গ্রহণ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনুবাদকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আসে বুকার পুরস্কারের মাধ্যমে। তারা লেখক এবং অনুবাদককে পুরস্কারের অর্থ সমানভাবে ভাগ করে দেন। সাংস্কৃতিক ভিন্নতার কারণে অনুবাদে প্রকৃত সাহিত্যের স্বাদ আসে না বলে যে বিতর্ক তোলা হয়, সেক্ষেত্রে সাংস্কৃতিকভাবে নির্দিষ্ট শব্দগুলোকে ধরে রেখে তা অভিযোজিত করতে হবে।’
তার মতে, বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে পারস্পারিক মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি এবং প্রবাসী বাঙালি এবং দেশের নতুন প্রজন্মে ইংরেজিভাষী বেড়ে যাওয়ায় বাংলা সাহিত্যের অনুবাদও এখন বাড়ছে। তবে, বাংলাদেশী অনুবাদকদের বেশিরভাগ অনুবাদ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে, বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান বা প্রকাশকদের দ্বারা প্রকাশিত হয়েছে, যাদের আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা নেই। ফলে, এই অনুবাদগুলি বিদেশী পাঠকদের কাছে পৌঁছতে পারে না। বাংলা সাহিত্যের অনুবাদ প্রসারে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ জোরদার করার কথা বলেন অধ্যাপক জামান। সেইসাথে ভালো মানের ই-বুক প্রকাশ এবং আন্তর্জাতিক বইমেলায় অংশগ্রহণের পরামর্শ দেন। পাশাপাশি অনূদিত সাহিত্য প্রসারে জার্নাল এবং সংবাদপত্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মত দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রধান উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য, অধ্যাপক ড. শামস রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের (অব.) অধ্যাপক ড. ফকরুল আলম, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির কোষাধ্যক্ষ, এয়ার কমডোর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং প্রয়াত নেহরীন খানের স্বজনগণ উপস্থিত ছিলেন।