‘ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তনে গণভোটের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে’
- ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৮:৫৭
সংবিধানে বিদ্যমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে কোনো মতপার্থক্য না থাকায় ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা পরিবর্তনের বিষয়ে গণভোটের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলো একমত পোষণ করেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৪তম দিনের আলোচনার সার সংক্ষেপ তুলে ধরে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অন্তর্ভুক্তির পর ভবিষ্যতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনোরকম মত ভিন্নতা নেই বলে এই ব্যবস্থা পরিবর্তনে গণভোটের কথা বলা হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান নিয়োগের ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আলোচনায় সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেছে বলে উল্লেখ করে কমিশনের সহসভাপতি বলেন, যদি উচ্চকক্ষ গঠিত না হয় বা উচ্চকক্ষ হওয়া পর্যন্ত সংবিধানের সংশোধনের জন্য সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের প্রয়োজন হবে। তবে সুনির্দিষ্ট কিছু অনুচ্ছেদ যেমন প্রস্তাবনা, রাষ্ট্রের মূলনীতি, অনুচ্ছেদ ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিষয়ক ৫৮খ, ৫৮গ, ৫৮ঘ এবং ৫৮ঙ অনুচ্ছেদের দ্বারা সংবিধানে যুক্ত হলে তা সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ও জোট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সমর্থন দিয়েছে মন্তব্য করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, প্রথম পর্যায়ের আলোচনায়ও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এ মত প্রকাশ করেছে। তবে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আজও ঐকমত্য হয়নি। এ ব্যাপারে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল বলছে ভোটের সংখ্যানুপাতে যেন উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়। অন্যদিকে আসনের সংখ্যানুপাতেও উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব আছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলো এ বিষয়ে একাধিক আলোচনার পরেও ঐকমত্যের জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি, সেহেতু দল এবং জোটগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার কমিশনের ওপর অর্পণ করা হয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট বিষয়ে নিজেদের মধ্যে এবং পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আগামী সপ্তাহে একটি অবস্থানে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আজকের আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।