২৭ মৃত্যুর ২২টিই নিয়মিত মামলা, অপমৃত্যু ৫টি

সংখ্যালঘু পরিষদের দাবির কড়া প্রতিবাদ পুলিশের

বাংলাদেশ পুলিশ লোগো
বাংলাদেশ পুলিশ লোগো © টিডিসি ফটো

গত ১০ জুলাই সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চা ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক সময়ে ২৭টি হত্যাকাণ্ড, হাজারো সাম্প্রদায়িক হামলা ও সহিংসতার অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানানো হয়। তবে এসব দাবির বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ভাষ্য, জানুয়ারি থেকে জুন ২০২৫—এই ছয় মাসে সংখ্যালঘুদের মধ্যে ২৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তার মধ্যে ২২টি ঘটনায় নিয়মিত হত্যা মামলা হয়েছে এবং ৫টি ঘটনায় দায়ের হয়েছে অপমৃত্যু মামলা।

তদন্তে এসব মৃত্যুর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা অপরাধ সংশ্লিষ্ট কারণ উঠে এসেছে। জমিজমা নিয়ে বিরোধে ২টি, আর্থিক লেনদেন ও মাদক নিয়ে ২টি, ডাকাতি বা দস্যুতা জড়িত ৭টি, সন্ত্রাসী গ্রুপের গুলিতে ১টি, তরমুজ কেনাবেচা নিয়ে ঝগড়ায় ১টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এছাড়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা ৩ জনের এবং বাকি ১১টি ঘটনায় মৃতদেহ উদ্ধারের পর তদন্ত চলছে।

এখন পর্যন্ত এসব মামলায় ৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, ১৫ জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন এবং ১৮ জন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, এসব কোনো ঘটনাই সাম্প্রদায়িকতার কারণে ঘটেছে এমন প্রমাণ মেলেনি।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার ২০টি অভিযোগের কথাও তুলে ধরা হয়। পুলিশ জানায়, এর মধ্যে ১৬টি ঘটনায় মামলা হয়েছে, ২৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। ৩টি ঘটনায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি এবং ১টি ঘটনায় সত্যতা মেলেনি।

সংখ্যালঘু পরিষদের দাবি করা ১৭৬৯টি সাম্প্রদায়িক হামলার মধ্যে পুলিশ ১৪৫৭টি ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এদের মধ্যে ৬২টিতে মামলা, ৯৫১টিতে জিডি হয়েছে এবং ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, জমি দখলের ৬০টি অভিযোগের বিপরীতে পুলিশের ভাষ্য, তদন্তে প্রাপ্ত ২০টি চুরির ঘটনায় ১৪টি মামলা, ৫টি জিডি, ২৪টি ভাঙচুরে ১৮টি মামলা এবং ৪টি জিডি হয়েছে। এসব মামলায় ১৫ জন গ্রেপ্তার, ১০ জন আত্মসমর্পণ করেছে।

পুলিশ বলছে, প্রতিটি ঘটনা গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান—সকলের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সংঘটিত ঘটনাগুলোর অধিকাংশই সাম্প্রদায়িক প্রেক্ষাপটের বদলে রাজনৈতিক, সামাজিক বা ব্যক্তিগত বিরোধজনিত বলে তদন্তে উঠে এসেছে।