অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
৬ মাসে মাসে ১৯৩৩ খুন ও ২৭৪৪টি ধর্ষণ মামলা
- টিডিসি রিপোর্ট
- ১৬ জুলাই ২০২৫, ১৫:২২
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাসে সারাদেশে ডাকাতি, দস্যুতা, খুন, দাঙ্গা, ধর্ষণ, নারী ও শিশু নির্যাতন এবং অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধে ৯১ হাজার ৩৩৮টি মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে খুনের মামলা রয়েছে ১ হাজার ৯৩৩টি এবং ধর্ষণের মামলা ২ হাজার ৭৪৪টি। সম্প্রতি বাংলাদেশ পুলিশ বিগত ৫ বছর এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুনে বিভিন্ন অপরাধের দায়ে রুজু করা সকল মামলার পরিসংখ্যান প্রকাশ্যে এনেছে। এ পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
পরিসংখ্যানটির তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সারাদেশে ডাকাতির ঘটনায় ৩৬৭টি, দস্যুতা ৯৭২টি, খুন ১৯৩৩টি, দ্রুত বিচার ৪৯৬টি, দাঙ্গা ৫৩টি, ধর্ষণ ২৭৪৪টি, এসিড নিক্ষেপ ২টি এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় ৮৩০২টি মামলা রুজু করা হয়েছে।এছাড়া, অপহরণ ৫১৭টি, পুলিশ আক্রান্ত ৩২৯টি, সিঁধেল চুরি ১৩৫৫টি, চুরি ৪৫৪০টি, অন্যান্য কারণে ৪২৭১০টি, অস্ত্র আইন ৯০২টি, বিস্ফোরক দ্রব্য ১৯৮টি, মাদকদ্রব্য ২৪৯৫৩টি এবং চোরা-চালানের ঘটনায় ৯৬৫টি মামলা রুজু হয়েছে। যেখানে মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়ায় ৯১৩৩৮।
পরিসংখ্যান আরও বলছে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত ১০ মাসে সারাদেশে বিভিন্ন অপরাধে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৫টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসময়ে সারাদেশে ডাকাতির ঘটনায় ৬১০টি, দস্যুতা ১৫২৬টি, খুন ৩৫৫৪টি, দ্রুত বিচার ৮৯৮টি, দাঙ্গা ৯৭টি, ধর্ষণ ৪১০৫টি, এসিড নিক্ষেপ ৫টি এবং নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় ১২৭২৬টি মামলা রুজু করা হয়েছে। এছাড়া, অপহরণ ৮১৯টি, পুলিশ আক্রান্ত ৪৭৯টি, সিঁধেল চুরি ২৩০৪টি, চুরি ৭৩১০টি, অন্যান্য কারণে ৬৮৬৮০টি, অস্ত্র আইন ১৪৩৬টি, বিস্ফোরক দ্রব্য ৫০০টি, মাদকদ্রব্য ৩৮১৭৬টি এবং চোরা-চালানের ঘটনায় ১৭৩০টি মামলা রুজু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘হয়তো তোমাকে ততটা ভালোবাসতে পারিনি’, ঢাবির সঞ্জুকে নিয়ে শিক্ষকের নির্মম স্বীকারোক্তি
বিগত ৫ বছরের মামলা বিশ্লেষণ করলে ২০২৪ সালে ১৭২৬৬৩টি, ২০২৩ সালে ১৯৫৪৩৬টি, ২০২২ সালে ২০৪২৩০টি, ২০২১ সালে ১৯৭৫১০টি এবং ২০২০ সালে ১৮৭৯২৬টি রুজুকৃত মামলার তথ্য পাওয়া যায়। এ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালের মামলার সংখ্যা বিগত ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এদিকে, বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি গণমাধ্যম প্রতিবেদনে এ বছর অপরাধের ব্যাপক বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে, যা নাগরিকদের মধ্যে ভয় ও অনিরাপত্তার অনুভূতি সৃষ্টি করেছে। তবে সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ পর্যন্ত পুলিশের অফিসিয়াল অপরাধ পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছর অপরাধের তীব্র বৃদ্ধির যে দাবি করা হচ্ছে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়। বরং গত ১০ মাসে প্রধান অপরাধের ধরণে স্থিতিশীলতা দেখা গেছে।
পুলিশ আরও বলছে, এই পরিসংখ্যান কোনো অপরাধ জোয়ারের ইঙ্গিত দেয় না; বরং দেখা যাচ্ছে, সবচেয়ে গুরুতর কিছু অপরাধ হয় কমেছে অথবা একই হারে রয়েছে। কেবলমাত্র কিছু নির্দিষ্ট ধরণের অপরাধে সামান্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। নাগরিকদের সচেতন থাকা উচিত, তবে একই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর আস্থা রাখাও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পরিসংখ্যানে সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল প্রবণতাই প্রতিফলিত হয়েছে।