কৃষিকাজে ব্যস্ত থেকেও জিপিএ-৫, উচ্চশিক্ষা নিয়ে চিন্তায় জিহাদ
- ২০ জুলাই ২০২৫, ১৪:৫৩
২০২৫ সালের এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ। এসএসসি পরীক্ষার সব শিক্ষার্থীরা পড়ালেখায় ব্যস্ত। কারণ ৩ দিন পরই পরীক্ষা। কিন্তু এর মাঝেও এক শিক্ষার্থীর সেদিকে কোন নজর নেই। সে মাঠের পেঁয়াজ তোলায় ব্যস্ত। তাকে দেখে ভাবাই যায় না, সে এবছরের পরীক্ষার্থী। যেদিন পরীক্ষা সেদিনও সকালে তাকে পেঁয়াজের জমিতে পেঁয়াজ তুলতে দেখা যায়। মাঠের সব কৃষক সেদিন ভেবেছিলো ভালো ছাত্র না হওয়ার কারণে পরীক্ষা দিবে না। কেউবা ভেবেছিল বোকা ছাত্র হয়তো ভুলেই গেছে পরীক্ষার কথা। কিন্তু তা নয়, সময়মতো সে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে অংশ নেয় ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায়।
রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের এ কৃষক শিক্ষার্থীর নাম জিহাদ মন্ডল। তার পিতার নাম আসাদুজ্জামান, মাতা চম্পা বেগম। জিহাদ এ বছর কালুখালী উপজেলার গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। একে একে সবগুলো পরীক্ষার দিন সকালে জিহাদ ছিল কৃষিকাজে ব্যস্ত, পরীক্ষার সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে। এ ব্যস্ত কৃষক শিক্ষার্থীই এবারের এসএসসি পরীক্ষা জিপিএ-৫ পেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
জিহাদ জানায়, আমি অতি দরিদ্র কৃষকের ছেলে। আমাকে পড়ালেখার করানোর সামর্থ বাবার নেই। তাই সারা বছর কৃষিকাজ করে নিজের পড়ালেখার খরচ যোগার করি। কাজে ব্যস্ত থাকায় দিনে পড়তে পারি না। রাতে নিয়মিত ৬ ঘন্টা পড়ালেখা করে এসএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি।
বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করা জিহাদ আরো জানায়, সে এইচএসসি ক্লাসেও বিজ্ঞান বিভাগে পড়বে। ফলাফল ভালো হলে সে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায়।
জিহাদের বাবা আসাদুজ্জামান বলেন, ছেলের পড়া লেখার খরচ দিতে পারিনি। ঠিকমতো খাবারও জোটেনি। তারপরও ভালো ফলাফলে সে খুশি। তবে হতাশাও আছে জিহাদের বাবা আসাদুজ্জামানের মাঝে। তার দুঃচিন্তা একটাই, তাহলো এসএসসি অয় খরচ, সহজে জোগার হলো। উচ্চ শিক্ষার জন্য অনেক টাকা লাগে। সেটা কোথায় পাবে। এ আশা- নিরাশার বাতাসে দোল খাচ্ছে কৃষক আসাদুজ্জামান ও পুত্র জিহাদের স্বপ্ন।