কলেজ ছাত্র মাহফুজ হত্যায় জড়িত ছিনতাই চক্র গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার  ছিনতাই চক্র
গ্রেপ্তার ছিনতাই চক্র © টিডিসি ফটো

গাজীপুরের টঙ্গীর আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মাহফুজুর রহমানকে হত্যা করা হয়। রবিবার (১৩ জুলাই) মামলায় জড়িত ছিনতাই চক্রের চার সদস্য ও এক চোরাই মোবাইল ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১। মাহফুজের বোন জামাই মো. জসিম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করেন।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নিহত মাহফুজুর রহমান (২২) হাতেম আলী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে তিনি ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়। তার নিথর দেহ পাওয়া যায় আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বিআরটি নির্মাণাধীন স্থানে।

ঘটনার পর কোনো ক্লু না থাকলেও র‌্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে মাহফুজের ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড ফোনটি হত্যার প্রায় দুই ঘণ্টা পর সক্রিয় অবস্থায় শনাক্ত হয়। এর সূত্র ধরে র‌্যাব-১ এর একটি অভিযানিক দল মোবাইলের বর্তমান ব্যবহারকারীকে নজরদারিতে নেয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সে ফোনটি টঙ্গীর মাজার বস্তির চোরাই মোবাইল ব্যবসায়ী রাকিবের কাছ থেকে ৩,৫০০ টাকায় কিনেছে।

পরবর্তীতে র‌্যাব রাকিবকে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে। তদন্তে জানা যায়, রাকিব একজন প্রাক্তন মাদক ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে কম দামে মোবাইল কিনে বিক্রি করেন এবং তাদের ধারালো অস্ত্র সরবরাহ করেন।

রাকিবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব আরও চারজনকে গ্রেফতার করে— মো. রাফসান ওরফে রাহাত (২৮), মো. রাশেদুল ইসলাম (২০), মো. কাওছার আহম্মেদ পলাশ (২৩) এবং রাকিব ইসলাম (২৬)। এদের মধ্যে রাহাত ছিলেন ঘটনার সময় মোটরসাইকেল চালক, পলাশ মূলত ছিনতাইয়ের মাল সংগ্রহকারী এবং রাশেদ ছিলেন ছুরি ব্যবহারে জড়িত।

গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছে, ঘটনার দিন তারা রাজধানীর হাউজ বিল্ডিং ও কুর্মিটোলা এলাকাতেও ছিনতাই করে। হত্যার দিন তারা প্রথমে মাদক সেবন করে এবং চোরাই মোবাইল ব্যবসায়ী রাকিবের কাছ থেকে ধারালো অস্ত্র সংগ্রহ করে বের হয়। মাহফুজের সঙ্গে হাতাহাতির একপর্যায়ে রাশেদ ছুরি ব্যবহার করে।

র‌্যাব জানায়, তারা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ছিনতাইকারীদের অবস্থান নিশ্চিত করে। তদন্তে দেখা যায়, ঘটনার সময় তারা ১১টা ৩৭ মিনিটে ঘটনাস্থলে প্রবেশ করে এবং ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই পুরো ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। হত্যাকাণ্ডের পর তারা রাকিবের কাছে তিনটি মোবাইল হস্তান্তর করে।

এক চাঞ্চল্যকর তথ্যে রাকিব জানিয়েছেন, মাহফুজ হত্যার পর মোবাইল বিক্রির অর্থ নেননি ছিনতাইকারীরা। বরং রাশেদ ফোনটি দিয়ে দ্রুত আত্মগোপনে চলে যান, কারণ সে বুঝতে পারে ঘটনাটি পুলিশি তদন্তের আওতায় চলে এসেছে।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।