মিটফোর্ডে ব্যবসায়ীকে হত্যার প্রতিবাদে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা © টিডিসি

পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।

শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ মিছিলটি ‘জুলাই ৩৬ স্কয়ার’, শিউলিমালা হল ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবন ঘুরে লাইব্রেরি ও নজরুল ভাস্কর্য পেরিয়ে ফের বিদ্রোহী হলের সামনে এসে শেষ হয়। 

পুরো পথজুড়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড হাতে নৃশংসতার বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ ও অবস্থান প্রকাশ করেন। 'দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিব রক্ত', 'রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়', 'সন্ত্রাসীরা উল্লাস করে, ইন্টেরিম কী করে?'— এমন স্লোগানে মুখরিত হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। শিক্ষার্থীরা বলেন, একের পর এক খুন-ধর্ষণ, চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটলেও কার্যকর বিচার না হওয়ায় অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

সমাবেশে আইন ও বিচার বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রাজু শেখ বলেন, বিএনপির মাধ্যমে যে প্রস্তর যুগ বাংলাদেশে ফিরে এসেছে, সে যুগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা দেখতে পাচ্ছি, সন্ত্রাসীরা যখন বিএনপির ছত্রছায়া থাকে, তখনই শুধু বহিষ্কারের নাটক হয়। আর জনগণ ইন্টেরিমকে শুধু গাছ লাগাতে নয়, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এই বিচার যদি না হয়, সম্মান নিয়ে বিদায় নিন—না হলে আন্দোলনে বিদায় নিতে বাধ্য করা হবে।

ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য সরকার বলেন, আমাদের এই সমাবেশের প্রয়োজন হতো না যদি আগের ঘটনাগুলোর বিচার হতো। আজকের হত্যাকাণ্ড রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার ফল। এটি নিছক খুন নয়—রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড। এ দায় সরকার এড়াতে পারে না। সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার ছাড়া এই ধরনের নির্মমতা বন্ধ হবে না। আমরা এমন সমাজ চাই না যেখানে খুন-ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল হয় আর মানুষ অসহায়ভাবে তা দেখে। আমরা দৃষ্টান্ত চাই।

প্রসঙ্গত, গত ৯ জুলাই পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের সামনে ৩ নম্বর গেটে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। ঘটনার ভিডিওটি ১১ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ।