অপরিকল্পিত ড্রেনেজে মনিরামপুরে জলাবদ্ধতা, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তির পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা
জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তির পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা © টিডিসি

যশোরের মনিরামপুর পৌরসভায় বৃষ্টি হলেই নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠছে জলাবদ্ধতা। অপরিকল্পিত ও অকার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি জমে যায় শহরের বিভিন্ন সড়কে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতেই পৌরসভার অধিকাংশ এলাকায় দেখা গেছে জলাবদ্ধতার দৃশ্য। এ সময় অনেককে রাস্তার নোংরা পানি এড়িয়ে জুতা হাতে হাঁটতে দেখা যায়। কেউবা উঠেছে রিকশা-ভ্যানে। শহরের কিছু সড়কে আবার সৃষ্টি হয়েছে স্রোতধারার মতো দৃশ্য। ড্রেনের পানি উপচে উঠছে রাস্তায়, আবার কোথাও পানিই নামছে না—পুরো শহর যেন এক জলমগ্ন দুর্ভোগের চিত্র।

১৯৯৭ সালের ১০ নভেম্বর ১২টি গ্রাম নিয়ে গঠিত হয় মনিরামপুর পৌরসভা। ২০০৬ সালে ‘খ’ শ্রেণি ও ২০১৯ সালে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত হয় এটি। বর্তমানে পৌর এলাকায় প্রায় ৫০ হাজার মানুষের বসবাস। কিন্তু নাগরিক এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থাটি রয়ে গেছে অপরিকল্পিত ও দুর্বল। কোথাও ড্রেনের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় কম, কোথাও আবার সঠিক নকশা নেই। অধিকাংশ ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার না হওয়ায় পানির স্বাভাবিক নিষ্কাশন পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

দুর্গাপুর গ্রামের নাছিমা বেগম বলেন, বৃষ্টি থামতেই বাড়িতে জমা থাকা পানির কারণে ভোগান্তিতে পোহাতে হয়। বাধ্য হয়ে নোংরা পানিতে নামতে হয় তাদের।

পথচারী মুজিবর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা যেমন দায়ী, তেমনি নেই কোনো সংস্কার। ফলে বৃষ্টির পানি সহজে নেমে যেতেও পারে না। আর এতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা, বাড়ে ভোগান্তি।

শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার জানান, অল্প বৃষ্টিতেও সম্মিলন স্কুল-সংলগ্ন প্রধানসড়কে পানি জমে। যে কারণে এ সড়কে চলাচলের সময় মাঝমধ্যে জুতা খুলে হাটতে হয়।

পিএফজির মনিরামপুরের অ্যাম্বাসেডর ও পৌরসভার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান রয়েল বলেন, কতৃপক্ষ লাখ লাখ টাকা খরচ করে ৬০ ফুট উচ্চতার লাল-নীল বাতি স্থাপন করতে পারছে। অথচ জলাবদ্ধতার কারণে মানুষের যে দুর্ভোগ সেদিকে তাদের খেয়াল নেই। 

পৌরসভার বাসিন্দা নাগোরঘোপ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মজিদ বলেন, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ময়লা জমে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ ও স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয় জলাবন্ধতা।

মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার প্রশাসক নিশাত তামান্না বলেন, বর্ষাকাল শুরুর আগে থেকেই ড্রেন পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। নতুন করে ক্যানেল করার কাজ চলমান। দীর্ঘদিনের সমস্যা এক দিনে সমাধান করা কঠিন। ইতিমধ্যে বড় বড় দুটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সেগুলো টেন্ডারে চলে গেছে। প্রাথমিকভাবে জলাবন্ধতা নিষ্কাশনের জন্য পৌরসভার লোকবলের পাশাপাশি অতিরিক্ত ১০জন লোক দিয়ে কাজ শুরু করা হয়ে। অচিরেই জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান হবে।