গার্মেন্টস বর্জ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবেশ: শুনানি শেষে ৫ দফা নির্দেশনা

শুনানি অনুষ্ঠান
শুনানি অনুষ্ঠান © টিডিসি ফটো

ময়মনসিংহের ভালুকায় অবস্থিত এক্সপেরিয়েন্স ও মুলতাজিম নামের দুটি গার্মেন্টস কারখানার বর্জ্যে আশপাশের পরিবেশ ও প্রতিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগে বিস্তারিত শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুনানি শেষে পরিবেশ রক্ষা ও ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত পাঁচ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে উপজেলা পরিষদের সভা কক্ষে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, স্থানীয় এলাকাবাসী, কৃষক ও কারখানার প্রতিনিধিগণ। পরিবেশ অধিদপ্তরের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যৌথভাবে শুনানিতে অংশ নেন।

শুনানি শেষে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, কারখানা দুটি থেকে সব ধরনের পরিবেশ দূষণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। ইটিপি প্ল্যান সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে, যাতে বর্জ্য যথাযথভাবে পরিশোধিত হয়। প্রাকৃতিক জলপ্রবাহে যে বাধা সৃষ্টি হয়েছে, তা অপসারণ করে পানির স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন, কৃষি ও মৎস্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি যৌথ দল গঠন করে কারখানা পরিদর্শন করা হবে এবং কারখানাকে করণীয় বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে। এই যৌথ কমিটির নির্ধারণ অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।

শুনানিতে অংশগ্রহণকারী এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, গার্মেন্টস দুটির তরল বর্জ্য ফসলি জমি ও আশপাশের জলাশয়ে জমে থাকায় কৃষি ও মৎস্য সম্পদ ধ্বংসের মুখে পড়েছে। এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানালেও কার্যকর পদক্ষেপ ছিল না বলে তারা দাবি করেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, আনুমানিক ১৫ বছর যাবত এক্সপেরিয়েন্স ও মুন্তাজিম মিলের বর্জ্যে ভালুকা ৮-১০ গ্রামের হাজার হাজার একর জমিতে কোনো ফসল হচ্ছে না। মিলে বর্জ্যে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির হওয়ার কারণে বিক্ষুব্ধ কৃষকরা বেশ কয়েকবার ঢাকা ময়মনসিংহ মহা সড়ক ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি।

প্রসঙ্গত, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা জানান, পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের আওতায় কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।