সাত কলেজ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিতুমীর কলেজকে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবি শিক্ষার্থীদের
- ০৮ জুলাই ২০২৫, ২২:৩১
রাজধানীর সরকারি সাত কলেজ নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি তিতুমীর কলেজকে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবি জানিয়েছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা কলেজটিকে অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে স্বতন্ত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের দাবি জানিয়েছেন। সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে কলেজের মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন করে এ দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। ‘তিতুমীর রক্ষা আন্দোলন’ নামের একটি প্লাটফর্মের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের ‘অধিভুক্তি না মুক্তি? মুক্তি মুক্তি’ স্লোগান দিতে দেখা যায়।
তিতুমীর কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন রাব্বী বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭টি সরকারি কলেজের সমন্বয়ে সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র হিসেবে দেখতে চাই। আমরা অধিভুক্তি চাই না। সাত দফা দাবিতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে এলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ছয়টি দাবি মেনে নেন। কিন্তু ওই দাবিগুলো বাস্তবায়নে কোন কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। আমরা ওই দাবিগুলো বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।’
কলেজটির শিক্ষার্থী আফিয়া অর্ণি বলেন, ‘এ আন্দোলন আজকের আন্দোলন নয়। আমাদের অগ্রজরা বহু আগে এ আন্দোলন শুরু করেন। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়ায় আমরা আবার রাজপথে নেমেছি। সেশন জট ও সঠিক সময়ে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা ঢাকা কলেজের অধিভুক্তি চাই না আমরা স্বতন্ত্র রূপে তিতুমীর কলেজকে দেখতে চাই।’
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় নামক পরীক্ষামূলক কাঠামোর অধীনে তিতুমীরকে নেওয়া যাবে না; তিতুমীরের জন্য স্বতন্ত্র কাঠামো গঠন করতে হবে; শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান সকল স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে; বর্তমানে তিতুমীর কলেজে প্রায় ৩৫ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে যাদের অধিকাংশই নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র পরিবারের সদস্য। একক পরিবারকে সক্ষমতার বাইরে রাজধানীর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া অসম্ভব। তাই কোনোভাবেই আসন সংখ্যা কমানো যাবে না; বৈধ প্রস্তাবনা বিবেচনায় নতুন সাবজেক্ট চালু করতে হবে। শিক্ষার্থী ও বিভাগ বিবেচনায় প্রয়োজনে নতুন অবকাঠামো নির্মাণ ও জমি অধিগ্রহণ করতে হবে; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষক সংখ্যা ঠিক রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে শিক্ষকের পদ বৃদ্ধি করতে হবে এবং ক্লাসের প্রয়োজনকালে বর্তমান শিক্ষার্থীগণ যাতে সেশনজটসহ নানা ধরনের প্রশাসনিক সমস্যার সম্মুখীন না হয় সে ব্যাপারে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
প্রসঙ্গত, তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরসহ মোট সাত দাবিতে অনশন ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকা অবরোধে ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ শুরু করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। গত ৩ ফেব্রুয়ারি অনশনরত ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মহাখালী রেলক্রসিং ও সড়ক আটকে অবস্থান নিলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কলেজ শাখার যুগ্মসচিব মো. নুরুজ্জামানসহ কর্মকর্তারা কলেজ ক্যাম্পাসে এসে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে জানানো হলেও মন্ত্রণালয়ে পক্ষ থেকে অন্যান্য দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা লাগাতার অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন।