‘আমি তোমাকে পুলিশে দেব’— শিক্ষার্থীকে চবি শিক্ষকের হুমকি
- ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৯
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক জামালুল আকবর চৌধুরীর বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে হয়রানি ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এসময় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে পুলিশে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক। বুধবার (০২ জুলাই) বিভাগীয় সভাপতি ও গতকাল উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান বরাবর অভিযোগপত্র দেন তিনি। ওই শিক্ষার্থীর নাম উৎস মাহমুদ। তিনি ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগপত্রে উৎস মাহমুদ উল্লেখ করেন, ‘অধ্যাপক জামালুল আকবর চৌধরী গত ২৯ শে জুন (রবিবার) দুপুর বেলা ৩০৬ নং কোর্সের ক্লাস টেস্ট পরীক্ষা নেওয়ার সময় আমাকে মানসিকভাবে হেনস্তা করেন ও পুলিশে দেয়ার হুমকি দেন। তার রূঢ় আচরণে ও হুমকি প্রদানের ফলে বর্তমানে আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছি। ঘটনার দিন দুপুর ১টা ২০ মিনিটে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তিনি ২টা ১২ মিনিটে নেয়া শুরু করেন। শুরুতেই তিনি পরীক্ষার সময় ঘোষণা করে সময় অনুযায়ী পরীক্ষা শেষ করার কথা বলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলে আমি ও কিছু শিক্ষার্থী খাতা জমা দিয়ে বিভাগের করিডোরে অবস্থান করছিলাম। কিন্তু পরীক্ষার সময় শেষ হওয়া সত্ত্বেও কতিপয় শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছিলো। স্যার তখন আমার সামনে আসায় আমি জানাই যে, স্যার পরীক্ষার সময় তো শেষ হয়ে গিয়েছে। এই মন্তব্য করার সময় ঘড়িতে ৩টা ০৪ মিনিট। কিন্তু তিনি আমার কথা শুনে অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং আমাকে ও সঙ্গে থাকা সহপাঠীদের নিয়ে শ্রেনীকক্ষে ঢুকেন যেখানে তখনো কিছু শিক্ষার্থী লিখছিল। তিনি আমার নামে বিভাগীয় সভাপতি বরাবর অভিযোগপত্র লেখার জন্য আমাদের ক্লাস প্রতিনিধিকে বাধ্য করেন এবং তিনি অভিযোগের ভাষ্য হিসেবে যা বলছেন তা লিখতে বাধ্য করেন। আবেদন তাঁর ভাষ্যমতে লেখা হলেও নিবেদক হিসেবে ক্লাস প্রতিনিধির (আইডি-২২১০৩০৮৬) নাম লিখতেও বাধ্য করেন। আমার নামে অভিযোগ হিসেবে লিখেন যে, আমি তাকে পরীক্ষার সময় শেষ হবার অনেক আগেই পরীক্ষার সময় শেষ বলেছি এবং এজন্য ব্যবস্থা নেয়ার উদ্দেশ্যে তিনি বিভাগীয় সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।’
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী আরও উল্লেখ করেন, ‘আমি আমার অপরাধ জানতে চাইলে এবং ২টা ১২ মিনিটে পরীক্ষা শুরু এবং ৩টা ৪ মিনিটে পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথাও অভিযোগপত্রে লিখতে বললে তিনি অত্যন্ত রূঢ়ভাবে আমাকে হয়রানি করতে থাকেন এবং চিৎকার দিয়ে বলেন, হোয়াই আর ইউ শাটিং এ্যাট মি? আমি তোমাকে পুলিশে দেব। এ ঘটনার সময় আমার দুজন সহপাঠী আমার দুপাশে দাঁড়িয়ে ছিল। ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। একজন পিতৃতুল্য শিক্ষকের দ্বারা এমন হুমকি ধামকি প্রদান আমাকে ট্রমার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।’ অভিযুক্ত শিক্ষক ক্লাসে না থেকেও ক্লাস প্রতিনিধির মাধ্যমে উপস্থিতি নিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ করেছেন বেশকিছু শিক্ষার্থী।
এ ব্যাপারে জানতে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শামীমা হায়দারকে একাধিকবার ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জামালুল আকবর চৌধুরী বলেন, ‘যেহেতু আমি অভিযোগের বিষয়ে এখনও জানিনা, তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছিনা ।’