মহাসড়কে বাজার, দুর্ভোগে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-সাধারণ মানুষ
- ০১ জুলাই ২০২৫, ০৯:০১
সরকারি নজরুল কলেজের মূল ফটকের সামনেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। ফটকের সামান্য দক্ষিণেই ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড। এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কজুড়েই গড়ে উঠেছে অবৈধ বাজার। দীর্ঘদিন ধরে দোকানিদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে এককালীন চাঁদা ও দিনচুক্তিতে ইজারা। প্রশাসনের চোখের সামনেই মহাসড়কে বাণিজ্য করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। ফলে নজরুল কলেজে প্রবেশে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পড়ছেন বেকায়দায়। যানজটে নাকাল সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় দোকানিরা জানান, প্রশাসনের লোকদেখানো উচ্ছেদ অভিযান হলেও মূল সিন্ডিকেট থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। এক দোকানি বলেন, 'উচ্ছেদ অভিযানের কিছুদিন পর আবার অবৈধ দোকার বসানো হয়।'
সড়ক জুড়ে এমন অবৈধ বাজার স্থাপন শুধু জনভোগান্তি নয়; বরং বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণও হতে পারে বলে শঙ্কা এলাকাবাসীর। তারা বলছেন, এই অবস্থার দ্রুত অবসান না হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে।
সচেতন মহলের দাবি, যেখানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় থাকা মহাসড়কে কোনো ইজারা না থাকার কথা, সেখানে বছরের পর বছর কীভাবে ইজারার নামে চাঁদা আদায় করা হয়? প্রশাসনের নীরব ভূমিকা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এ চক্র বেপরোয়াভাবে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে নজরুল কলেজ মার্কেটের রাজধানী হোটেলের স্বত্বাধিকারী গোলাম মোস্তফা বলেন, 'এসব অবৈধ দোকানের কারণে পদচারী-সেতু ব্যবহার করতে গিয়ে গাদাগাদির কারণে এখানে নিয়মিত চুরি-ছিনতাই হচ্ছে। অনেক সময় নারীরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ছেন।'
এক বৃদ্ধ দোকানি বলেন, 'আমি ৪০ বছর ধরে এখানে দোকান করতে দেখছি। কেউই আমাদের ওঠাতে পারেনি।'
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর বাজার ইজারাদার শহীদ মিয়া দাবি করেন, তিনি মহাসড়ক ইজারা নিয়েছেন। তারপর তিনি বলেন, 'প্রতিদিন কিছু টাকা নিই। জায়গা কোন কর্তৃপক্ষের আওতায় তা সঠিক জানি না। পৌর প্রশাসক জানেন।'
সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুর রহমান বলেন, এখানে শনিবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা এবং জরিমানাও করা হয়েছে। এটি অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে ত্রিশাল পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী বলেন, মহাসড়ক ইজারার আওতায় নয়। অভিযুক্ত শহীদকে কয়েকবার ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তিনি দায় স্বীকার করেননি। তিনি আরো বলেন, দ্রুতই অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হবে।