জাবিতে অটোরিকশা চালুর দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা

জাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা
জাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) পুনরায় অটোরিকশা চালুর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন করেছে একদল শিক্ষার্থী। বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবক, কমনওয়েলথের প্রতিনিধি দল, সাংবাদিকরা প্রশাসনিক ভবনে আটকা পড়ে। এছাড়াও ভর্তি হতে আসা অনেক শিক্ষার্থী ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে তাদেরকে ভবনের জানালা দিয়ে ভর্তির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে দেখা যায়। ফলে ভর্তি হতে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিড়ম্বনার শিকার হন।

অবরুদ্ধদের বের হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও আন্দোলনকারী কিছু শিক্ষার্থী বাজে ভাষায় গালাগাল করেন এবং শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে এগিয়ে আসেন বলে জানা গেছে।

ভবনে আটকে পড়া প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৫১তম ব্যাচের তানজির রহমান হিমেল, ইতিহাস বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং ইতিহাস বিভাগের ছাত্র সংসদের জিএস এ কে এম রোকোনুজ্জামান রিমন ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ৫০তম ব্যাচের নাইম আহমেদ সানিসহ আরো অনেকে প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন বাকিদের পরিচয় জানা যায়নি।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা যখন ভবনের ভেতরে ঢুকতে চেয়ে আন্দোলনকারীদের কাছে অনুরোধ করেন, তখন তারাও রোষানলে পড়েন। আন্দোলনকারীদের মধ্যে কয়েকজন তাদের দিকেও চড়াও হন। এক পর্যায়ে প্রবল চাপে আন্দোলনকারীরা ভবনের তালা খুলে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন একদল শিক্ষার্থী। এর আগে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্বাশত প্রামাণিক তার ফেসবুকে লেখেন, ‘আমাদের দাবিতে একমত না হলে জাকসুও আটকে যাবে।’ তিনি আন্দোলনের জন্য সবাইকে দুপুর সাড়ে বারোটায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানান।

ভবনের ভেতরে আটকে পড়া শিক্ষার্থী আয়েশা আক্তার যিনি খুলনা থেকে ভর্তি হতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তো কোনো রাজনীতি করতে আসিনি। শুধু ভর্তি হতে এসেছি। অথচ আমাদের জিম্মি করে রাখা হয়েছে। তালা খুলতে বলায় বাজে ব্যবহার করেছে কয়েকজন।’

ভবনের ভিতরে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ কান্নাকাটি শুরু করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম ভিতরে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে কমনওয়েলথের অতিথি ও সাংবাদিকদের বের করে দেওয়ার দাবি জানালেও বিক্ষোভকারীরা উপস্থিত  সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন এবং মারতে তেড়ে আসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী আকিব সুলতান বলেন, ‘সাংবাদিকদের বের হওয়ার অনুরোধে আন্দোলনকারীরা রেগে যান, এমনকি তাদের মারতে পর্যন্ত তেড়ে আসেন। এটা খুবই দুঃখজনক ও ন্যাক্কারজনক আচরণ।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘তারা প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করেছে। আমরা তাদের লিখিত আবেদন দিতে বলেছি। সেই আবেদন পর্যালোচনা করে সাত দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণের বিষয়ে ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’