২৯ জুনের মধ্যে ভিসি নিয়োগ না হলে কঠোর কর্মসূচি: কুয়েট শিক্ষক সমিতি

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) © সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) চরম অচলাবস্থার মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত সংকট নিরসনে ২৯ জুনের মধ্যে একজন যোগ্য ও স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানিয়েছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি। দাবি পূরণ না হলে তারা কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক অনাকাঙ্ক্ষিত হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হাতে আহত হন। এ ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতা ও প্রশাসনের ব্যর্থতা ঘিরে শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়, যা আন্দোলনে রূপ নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন উপাচার্য ও প্রোভিসিকে সরকার অপসারণ করা হয়। 

পরবর্তীতে গত ৩ মে চুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় শিক্ষকসমাজে অসন্তোষ তৈরি হয়। শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণে অনীহা দেখিয়েছেন। ফলস্বরূপ ৪ মে থেকে শিক্ষকরা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন।

সংকট চলাকালীন ১৯ মে অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি ড. হযরত আলী কোনো দায়িত্বপ্রাপ্তকে অবহিত না করেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে।

এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। বেতন-বোনাসও আটকে আছে, যা ঈদের আগেও ছাড় করা সম্ভব হয়নি। উন্নয়ন প্রকল্পগুলোও স্থবির হয়ে পড়েছে। ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। এই নিষ্ক্রিয়তায় শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা বিরাজ করছে।

এই প্রেক্ষাপটে গত ৪ জুন ভিসি নিয়োগসংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও দীর্ঘসূত্রিতা এবং ধীরগতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকরা। তারা বলেন, কুয়েটের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে যেখানে ৬০ জনেরও বেশি অধ্যাপক রয়েছেন, সেখানে এত দেরি অগ্রহণযোগ্য।

এই পরিস্থিতি উত্তরণে ২৩ জুন অনুষ্ঠিত কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে এবং ২৯ জুনের মধ্যে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এদিকে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বলছে, কুয়েট শিক্ষক সমিতির কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তীকালীন ভিসি পদত্যাগ করেছেন এবং কুয়েট স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রমে ফিরতে পারছে না।