ঢাবিতে চান্স পেলেন বাগেরহাটের প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে ধীমান বিশ্বাস
- ২৪ জুন ২০২৫, ১৮:৩৪
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার হিজলা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম বোয়ালিয়ায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা ধীমান বিশ্বাস আজ অনেক তরুণের জন্য অনুপ্রেরণার নাম। সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যেও নিজের মেধা ও অধ্যবসায়ের বলে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
ধীমানের বাবা মোল্লাহাট সরকারি মহিলা কলেজের দর্শন বিভাগের একজন নন-ক্যাডার প্রভাষক। মা গৃহিণী। পরিবারের একান্ত সহায়তা ও নিজের কঠোর পরিশ্রমেই এগিয়ে চলেছেন তিনি।
এসএসসি পাস করেন চিতলমারীর প্রত্যন্ত এক বিদ্যালয়,বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে তিনি চলে আসেন ঢাকায়, চাচার বাসায় থেকে ভর্তি হন ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে। সেখানে মানবিক বিভাগে পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমেও সক্রিয় ছিলেন তিনি। ২০২৩ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে বিতর্ক প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ে তিনি অর্জন করেন দ্বিতীয় স্থান,যা ছিল তার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য মোড়।
এরপর শুরু হয় ভর্তি যুদ্ধ। একে একে দেশের নামকরা প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটে মেধা তালিকায় স্থান পান ১৪৩২তম হয়ে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটে তিনি হন অষ্টম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটে ১৭৯তম এবং ‘ডি’ ইউনিটে ৬০৫তম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডি’ ইউনিটে তার অবস্থান ছিল ৮৩৪তম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটে তিনি ছিলেন ৫০৫তম। এ ছাড়া গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় তার অবস্থান ২২৪৬ তম।
সবশেষে, নানা ভাবনা-পর্যালোচনার পর ধীমান বর্তমানে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগে।
গ্রামের এক মেধাবী শিক্ষার্থীর ঢাকায় এসে বড় স্বপ্ন ছোঁয়ার এই গল্প শুধু তার ব্যক্তিগত সাফল্যের চিত্রই নয়, এটি দেশের হাজারো প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীদের জন্য এক উদ্দীপনাদায়ী বার্তা, সুযোগ পেলে ও পরিশ্রম করলে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ
চান্স পাওয়ার পর কেমন অনুভূতি ছিল জানতে চাইলে ধীমান বলেন, আমার মতো ছেলে এত প্রত্যন্ত একটা গ্রাম থেকে এসে যে এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে চান্স পাব, এগুলো আমার ভাবনার বাহিরে ছিল। তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী ছিলাম নিয়মিত পড়াশোনা করলে সৃষ্টিকর্তা আমাকে ফল দিবেন এবং সেটি পেয়ে আমি বেশ খুশি।