ক্লাসরুমকে বেডরুম বানালেন উপাধ্যক্ষ

ক্লাসরুমকে বেডরুম বানিয়ে ব্যবহার করছেন উপাধ্যক্ষ আতাউল হক খান
ক্লাসরুমকে বেডরুম বানিয়ে ব্যবহার করছেন উপাধ্যক্ষ আতাউল হক খান © টিডিসি সম্পাদিত

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের একটি শ্রেণিকক্ষের আসবাবপত্র সরিয়ে নিজের ব্যক্তিগত বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করছেন উপাধ্যক্ষ আতাউল হক খান। গত ২ বছর থেকে তিনি কলেজের ৩১০১ ক্লাস রুমটি দখল করে বসবাস করছেন। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩১০১ নম্বর কক্ষটি এখন বসবাসের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। সেখানে বিছানা, এসি, ফ্রিজ, টিভি, আলনা, চেয়ার-টেবিল ও কম্পিউটারসহ নানা গৃহস্থালি সামগ্রী স্থাপন করা হয়েছে। ক্লাসরুমের আসল আসবাবপত্র সরিয়ে দিয়ে ঘরটি রং করে ব্যক্তিগত বেডরুম হিসেবে ব্যবহার উপযোগী করে নেওয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, আতাউল হক ২০১৬ সালের ৭ আগস্ট থেকে ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজবাড়ীর পাংশা সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে তার বিরুদ্ধে নানা বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারির পরে তাকে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে বদলি করা হয়।  

বদলি হয়ে এসে প্রথম দিকে তিনি সরকারি কলেজের ডরমেটরিতে থাকলেও সর্বশেষ গত ২ বছর থেকে তিনি কলেজের ৩১০১ ক্লাস রুমটি দখল করে বসবাস করছেন। এছাড়াও তিনি বাড়ি ভাড়া না নিলেও সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়মিত বাড়িভাড়া বাবদ তার মূল বেতনের ৩৫ শতাংশ পাচ্ছেন।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক কর্মচারী বলেন, আতাউল স্যার ২ বছরেরও বেশি সময় সময় ধরে কলেজের একটি রুমে থাকছেন। আজ কয়েকদিন হলো ছুটিতে বাড়িতে গেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক শিক্ষক বলেন, তিনি দুর্নীতিতে লিপ্ত। কলেজের বিভিন্ন খাতের টাকা এদিক-সেদিক করেন। এর আগে যে কলেজে ছিলেন, সেখানে তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা আছে।’ 

অভিযোগের বিষয়ে উপাধ্যক্ষ আতাউল হক খান বলেন, এটা আমি ঠিক করি নাই। আমি আর সেখানে থাকব না।’ 

সরকারি বাড়ি ভাড়া নেওয়ার পরও কেন শ্রেণিকক্ষকে বেডরুম হিসেবে ব্যবহার করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে অধ্যক্ষ স্যার থাকতে বলছে। আমি একা মানুষ, তাই দূরে কোথাও না থেকে কলেজে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্যার। এর আগেও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষকসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক এখানে ছিলেন।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মীর্জা মো.নাসির উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। এমন হয়ে থাকলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।