নাটোরে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ

পদ্মা জেনারেল হাসপাতাল
পদ্মা জেনারেল হাসপাতাল © টিডিসি

নাটোরের লালপুরে পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।

রবির (২২ জুন) বিকেলে ক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতালটির সামনে হট্টগোল করেন। পরবর্তী সময়ে ওই দিন রাত ১১টার দিকে ভুক্তভোগী মা লালপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুন বিকেল চারটার দিকে লালপুর উপজেলার দক্ষিণ লালপুর গ্রামের ফয়সাল খানের স্ত্রী জাহানারা খাতুন (৩১) প্রসবজনিত জটিলতা নিয়ে পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা ইসলাম বিভার অধীনে ভর্তি করা হয়। রাত পৌনে ৯টার দিকে প্রসবব্যথা শুরু হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স ও আয়া অস্ত্রোপচার ছাড়াই নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করেন। রাত ১০টার দিকে নার্স ও আয়ার সহায়তায় সন্তান প্রসব হয়।

স্বজনদের অভিযোগ, ওই সময় মূল চিকিৎসক উপস্থিত না থাকায় প্রসবকালীন জটিলতা দেখা দেয় এবং নবজাতকের গলা, মাথা ও বুকে গুরুতর আঘাত লাগে। নবজাতকের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়লেও হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসার কোনো পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। পরে রাত ১০টা ৫ মিনিটে নবজাতককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। তবে পরদিন (২০ জুন) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নবজাতক মারা যায়।

এ বিষয়ে মৃত শিশুর স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসকের অবহেলা, উপস্থিত না থাকা এবং অদক্ষ নার্স ও আয়ার মাধ্যমে ডেলিভারি করানোর কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন: যশোরে এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিতের ভুয়া বিজ্ঞপ্তি, বিভ্রান্ত না হওয়ার পরামর্শ বোর্ডের

এ প্রসঙ্গে পদ্মা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানুজ্জামান টিপু দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘প্রসূতি জাহানারা খাতুন প্রথমে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছিলেন। সেখানে প্রসব না হওয়ায় সন্ধ্যায় আমাদের হাসপাতালে আসেন। রোগী দীর্ঘদিন ধরে ডা. ফারজানা ইসলামের চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার পরিবার প্রথম সন্তানের জন্য নরমাল ডেলিভারির অনুরোধ জানায় । ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জানান, নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রাত ১০টা পর্যন্ত নরমাল ডেলিভারির জন্য চেষ্টা করা যেতে পারে বা আপনারা চাইলে এখন ই সিজার করতে পারেন। পরে রাত ৯টা ২০ মিনিটে সন্তান প্রসব হয়। জন্মের সময় শিশুটি কান্না করেনি, আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার চেষ্টা করি এবং অবস্থা খারাপ হলে দ্রুত রাজশাহীতে পাঠানো হয়।’

এ বিষয়ে লালপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’