নাটকীয়তার আভাস গলে, লিড নিয়ে পঞ্চম দিনে যাচ্ছে বাংলাদেশ
- ২০ জুন ২০২৫, ২৩:০১
তৃতীয় দিন পর্যন্ত ব্যাটারদের স্বর্গভূমি মনে হচ্ছিল গলের উইকেট। এমনকি ম্যাচের ফল নিয়েও নিশ্চিত কিছু বলতে পারেননি বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ শন টেইট। কিন্তু শুক্রবার, চতুর্থ দিনে মধ্যাহ্নভোজের পর দৃশ্যপট বদলে যায় নাটকীয়ভাবে। ফ্ল্যাট উইকেট হঠাৎই হয়ে ওঠে স্পিন সহায়ক, উইকেট থেকে উড়তে থাকে ধুলা। শেষ দুই সেশনে পড়েছে ৭টি উইকেট। ব্যাটারদের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ভরা এই দিন শেষে রোমাঞ্চকর এক শেষ দিনের আভাস মিলেছে গল টেস্টে।
চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ১৭৭ রান। প্রথম ইনিংসের ১০ রানের লিড মিলিয়ে এগিয়ে এখন ১৮৭ রানে। হাতে রয়েছে ৭ উইকেট, সামনে পুরো একটি দিন। গলে শেষ দিনে টেস্টের রঙ পাল্টে দিতে পারে প্রতিটি সেশনের খেলা।
বাংলাদেশের হয়ে সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্ত ব্যাট হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ফিফটি করে ফেরেন সাদমান, ১২৬ বল খেলে ৭৬ রান করেন ৭টি চারে। শান্ত রয়েছেন অপরাজিত, করেছেন ৫৬ রান। তাঁর সঙ্গে উইকেটে রয়েছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম, যিনি ২০ রানে ব্যাট করছেন। শান্ত-মুশফিক এরই মধ্যে গড়েছেন ৪৯ রানের অপরাজিত জুটি।
এর আগে এনামুল হক বিজয় দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ—মাত্র ৪ রান করে ফিরেছেন। মুমিনুল হকও প্রথম ইনিংসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেন। থিতু হয়ে সুইপ করতে গিয়ে ফিরেছেন ১৪ রানে। তবে শান্ত-সাদমানের ৬৮ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি বাংলাদেশের ইনিংস গুছিয়ে তোলে।
শ্রীলঙ্কার বোলারদের মধ্যে প্রবাত জয়াসুরিয়া, থারিন্দু রত্নায়েকে ও মিলান রত্নায়েকে একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
চতুর্থ দিনের শুরুটা অবশ্য ছিল শ্রীলঙ্কার নিয়ন্ত্রণে। তারা প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৪৬৫ রান নিয়ে নামে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে। মনে হচ্ছিল, লিড নেওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। তবে সেই আশা ভেস্তে দেন নাঈম হাসান। মধ্যাহ্নভোজের পর মাত্র ২০ রানে লঙ্কানরা হারায় শেষ ৪ উইকেট। ইনিংস থামে ৪৮৫ রানে—বাংলাদেশের চেয়ে ১০ রান পিছিয়ে।
নাঈম হাসান ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। এটি তাঁর চতুর্থবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি, এর মধ্যে দুবারই শিকার শ্রীলঙ্কা। এই টেস্টে বিদেশের মাটিতে এটি তাঁর প্রথম ফাইফার।
শেষ দিনে ম্যাচ ফলাফলের সম্ভাবনা এখনও উন্মুক্ত। বাংলাদেশের সামনে দ্রুত রান তুলে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে নামানোর কৌশল হতে পারে। অন্যদিকে, লঙ্কান বোলারদের লক্ষ্য থাকবে দ্রুত উইকেট তুলে নিয়ে রান তাড়া করার সুযোগ তৈরি করা। সব মিলিয়ে গল টেস্টের শেষ দিন হতে যাচ্ছে উত্তেজনা, নাটক আর ক্রিকেটীয় সূক্ষ্ম কৌশলের লড়াইয়ের মঞ্চ।