যশোর বোর্ডে উচ্চমাধ্যমিক ঝরে পড়েছে ১৮ হাজার শিক্ষার্থী

যশোর শিক্ষা বোর্ড
যশোর শিক্ষা বোর্ড © সংগৃহীত

যশোর শিক্ষা বোর্ডে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার চিত্র উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ১ লাখ ১৬ হাজার ৩১৭ জন শিক্ষার্থী, যেখানে ২০২৩ সালে এসএসসি পাস করেছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ২১৩ জন। অর্থাৎ দুই বছরের ব্যবধানে প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী পাঠ্যক্রম থেকে ছিটকে পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. আব্দুল মতিন।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষার তুলনায় যশোর শিক্ষা বোর্ডে ২০২৫ সালে পরীক্ষার্থী কমেছে ৬ হাজার ১৯৪ জন। তবে বেড়েছে কেন্দ্রের সংখ্যা। এ বছর বোর্ডের অধীনে ৫৭৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ১৬ হাজার ৩১৭ পরীক্ষার্থী ২৪০টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় বসবে। গত বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন। 

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রী রয়েছে ৫৮. হাজার ৪৭২ জন এবং ছাত্র ৫৭ হাজার ৮৫৪ জন। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২২ হাজার ৭৭ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১১ হাজার ২৮৪ জন ছাত্র এবং ১০ হাজার ৭৯৩ জন ছাত্রী। মানবিক বিভাগের ৮১ হাজার ৪৭৬ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৯ হাজার ২৫৬ ছাত্র এবং ৪২ হাজার ২২০ জন ছাত্রী। ব্যবসা শিক্ষা বিভাগের ১২ হাজার ৭৬৪ জন পরীক্ষার্থীর শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭হাজার ৩০৫ ছাত্র এবং ৫ হাজার ৪৫৯ ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিবে।  

তিনি আরো বলেন, যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২৪০টি কেন্দ্রে অংশ নেবে ৫৭৫ কলেজের পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে খুলনার ৪৬ কেন্দ্রে অংশ নেবে ১১১ কলেজের পরীক্ষার্থী, যশোরের ৫০ কেন্দ্রে অংশ নেবে ১১৬ কলেজের পরীক্ষার্থী, বাগেরহাটের ২১ কেন্দ্রে অংশ নেবে ৪৯ কলেজের পরীক্ষার্থীরা, সাতক্ষীরার ২৩টি কেন্দ্রে অংশ নেবে ৭৪ কলেজের পরীক্ষার্থীরা, কুষ্টিয়ার ২৩ কেন্দ্রে অংশ নেবে ৭৯ কলেজের পরীক্ষার্থীরা, চুয়াডাঙ্গার ১২ কেন্দ্রে অংশ নেবে ২৪ কলেজের পরীক্ষার্থী, মেহেরপুরের ৭ কেন্দ্রে অংশ নেবে ২২ কলেজের পরীক্ষার্থী, নড়াইলের ১১ কেন্দ্রে অংশ নেবে ২৪ কলেজের পরীক্ষার্থী, ঝিনাইদহের ২৭ কেন্দ্রে অংশ নেবে ৮৫ কলেজের পরীক্ষার্থী ও মাগুরার ২০ কেন্দ্রে অংশ নেবে ৩৯ কলেজের পরীক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের পড়ার বিষয়ে চৌগাছার তরিকুল ইসলাম পৌর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটু বলেন, এসএসসির তুলনায় এইচএসসিতে একজন শিক্ষার্থীকে তুলনামূলক বেশি দক্ষতা দেখাতে হয়। এরমধ্যে অনেকে নতুন কলেজে খাপ খাওয়াতে পারে না। যে কারণে শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে। 

তিনি আরও বলেন, কিছু বছর ধরে ছেলে-মেয়েদের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একটু বড় যখন হচ্ছে তখন পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে। বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের প্রতি মাত্রাতিরিক্তভাবে ঝুঁকে পড়ে পারিবারিক শৃঙ্খলাবোধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধ কমে গেছে। শিক্ষকদের নির্দেশনা না মানাসহ এমন অসংখ্য প্রবণতা তৈরি হয়েছ এ জেনারেশনের মধ্যে। যার প্রভাব টোটাল শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর পড়েছে। যে কারণে শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে।