১২ বছর আগে ডিবি হেফাজতে কৃষকদল নেতার মৃত্যু, সাবেক হুইপ-এসপির বিরুদ্ধে মামলা

আবু বক্কর সিদ্দিকী বাচ্চু
আবু বক্কর সিদ্দিকী বাচ্চু © সংগৃহীত

২০১২ সালে শেরপুরে ডিবি হেফাজতে জেলা কৃষক দলের সহ-সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিকী বাচ্চু (মেকার) মৃত্যুর ঘটনায় ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গত ১ জুন নিহতের ছেলে মোকারুল ইসলাম মহন বাদি হয়ে শেরপুর সদর আমলী আদালতে এ মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শেরপুরের তৎকালীন হুইপ ও মহিলা এমপি এবং পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিবির পরিদর্শক

মঙ্গলবার (১৭ই জুন) দুপুরে  শুনানি শেষে শেরপুর সদর আমলী আদালতের বিচারক সুলতান মাহমুদ মিলন  মামলাটি পিবিআই পুলিশ সুপার জামালপুর কে তদন্তের জন্য আদেশ দেন।

আসামীরা হলেন- শেরপুরের সাবেক পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান, সাবেক অফিসার ইনচার্জ গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) নজরুল ইসলাম,  সাবেক সেকেন্ড অফিসার গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) জহুরুল ইসলাম, সাবেক এসআই (পুলিশ ফাঁড়ি) নজরুল ইসলাম, সাবেক এসআই গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) রিয়াদ হোসেন, সাবেক এমপি (শেরপুর-১) ও হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সাবেক এমপি. ও মহিলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ফাতেমাতুজহুরা শ্যামলী), আরিফ রেজা, শুভ রেজা, আনোয়ারুল হাসান উৎপল, শ্রী চন্দ্রন সাহা, তরিকুল ইসলাম রাজু, আমিরুল ইসলাম, শরিফুল রহমান শরিফ, মোহাম্মদ আলী, শহিদুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, আঃ আলিম, জাহাঙ্গীর আলম, আষীষ কুমার সুর, মাসুদ রানা, বেলাল হোসেন, সাইদুল ইসলাম (সাইদ), মাহবুবা রহমান শিমু, মনিরুজ্জামান মিলন তালুকদার, আব্দুল হামিদ, শামীম আরা বেগম, হাজী মোশারফ, চানু মিয়া, সেতু দত্তসহ আরও অনেকে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, শেরপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান ও ডিবির ওসি নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় ডিবি পুলিশ ২০১২ সালের ৩ ডিসেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে শহরের সজবরখিলা মহল্লার বাড়ি থেকে বিএনপি নেতা আবু বক্কর সিদ্দিকীকে ডিবি অফিসে নিয়ে যায়। পরদিন ৪ ডিসেম্বর রাত আড়াইটার দিকে আবু সিদ্দিকী বাচ্চুর নিথর দেহটি তার বাড়িতে রেখে যায় পুলিশ। 

পরিবারের অভিযোগ, আবু বক্কর সিদ্দিকী বাচ্চু ডিশ ক্যাবলের ব্যবসার পাশাপাশি বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তার নামে কোনো মামলা ছিল না। তাকে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও পুলিশ প্রশাসনের লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডিবি হেফাজতে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। 

নিহতের ছেলে মোকারুল ইসলাম মোহন গণমাধ্যমকে বলেন, বাবাকে হত্যা করার পর পুলিশ পাহারায় জানাজা এবং দাফন সম্পন্ন করা হয়। আমরা মামলা করতে পারি নাই। মামলা না করার জন্য পুলিশ সবসময় আমাদের ভয়ভীতি দেখাতো এবং আমাদের তিন ভাইকে বিভিন্ন মামলায় দিয়ে হয়রানি করেছে। আমি আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল আজিজ সজীব রানা বলেন, এ ঘটনায় নিহতের  ছেলে মোহন বাদী হয়ে সাবেক পুলিশ সুপার, সহকারী পুলিশ সুপার এবং ডিবি ওসি ও কয়েকজন কনস্টেবলসহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি মামলা করেছেন।