শিক্ষক নিয়োগে আর গণবিজ্ঞপ্তি দেবে না এনটিআরসিএ

এনটিআরসিএ
এনটিআরসিএ © ফাইল ফটো

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে আর গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে না বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। অর্থাৎ ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির পর ৭ম গণবিজ্ঞপ্তি হওয়ার কথা থাকলেও সেটি আর হবে না। এখন থেকে শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তিই হবে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বলে জানা গেছে। 

রোববার (১৫ জুন) বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, শিক্ষক নিবন্ধন ও নিয়োগ কার্যক্রমে নতুন বিধি যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন বিধিমালায় একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে শিক্ষক নিবন্ধনে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ সবাই চাকরির সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর আলাদা করে গণবিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করতে হবে না।

জানতে চাইলে এনটিআরসিএর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুহম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একটি নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পাওয়া গেছে। এটি এখন জনপ্রশাসনে রয়েছে। এরপর আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। বিধিমালা অনুমোদনের পর এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।’

এনটিআরসিএর একটি সূত্র জানিয়েছে, নতুন বিধিমালায় ‘১৯তম’ শিক্ষক নিবন্ধন বিজ্ঞপ্তি থাকছে না। এর পরিবর্তে কেবলমাত্র শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি লেখা হতে পারে। মূলত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বিসিএসের আদলে সরাসরি শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এনটিআরসিএ।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা জানান, ‘বিসিএসের মতো একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সবাই চাকরির সুযোগ পাবেন। যতগুলো পদ ততজনকেই পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ করানো হবে। এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে বয়সও গণনা করা হবে।’

এনটিআরসিএর কার্যক্রমে এত পরিবর্তন আনার কারণ জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘চাকরিপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমাতে বিধিমালায় অনেকগুলো পরিবর্তন আনা হয়েছে। এনটিআরসিএর বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ ছিল, তারা সনদধারী বেকার তৈরি করে। এই অপবাদ থেকে মুুক্তি মিলবে। এ ছাড়া গণবিজ্ঞপ্তিতে বয়সসংক্রান্ত জটিলতাও দূর হবে। নতুন বিধি বাস্তবায়ন হলে বয়স নিয়ে আর কোনো সমস্যা থাকবে না। সবদিক বিবেচনায় নিয়েই এ পরিবর্তনগুলো আনা হচ্ছে।’

জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত পাঁচটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এক লাখের বেশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ। আসন্ন ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আরও ৬০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত ১৮টি শিক্ষক নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে অংসখ্য প্রার্থীকে সনদ দিয়েছে সংস্থাটি।

প্রসঙ্গত, দেশে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩০ হাজার ৮২৬। এরমধ্যে স্কুল ১৭ হাজার ৬৩৪টি, কলেজ ২ হাজার ৮৬৮টি, মাদ্রাসা ৮ হাজার ২২৯টি এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২ হাজার ২২২টি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক বা সমপর্যায়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশের দায়িত্ব এনটিআরসিএ এর।