বার্সেলোনা, লিভারপুল ও আর্সেনাল খেলছে না ক্লাব বিশ্বকাপে—কারণ কী?

ক্লাব বিশ্বকাপে নেই সেরা তিন ক্লাব
ক্লাব বিশ্বকাপে নেই সেরা তিন ক্লাব © সংগৃহীত

রাত পোহালেই পর্দা উঠছে ফিফার সবচেয়ে বড় ক্লাবভিত্তিক টুর্নামেন্ট—ক্লাব বিশ্বকাপ। যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপে  নতুন ফরম্যাটে এবার প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছে ৩২টি ক্লাব, যাদের বাছাই করা হয়েছে গত চার বছরে ইউরোপ, লাতিন আমেরিকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। কিন্তু তালিকায় নেই জনপ্রিয় তিন ক্লাব—বার্সেলোনা, লিভারপুল ও আর্সেনাল। কেন তারা জায়গা পায়নি, সেটা নিয়েই তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।

ক্লাব বিশ্বকাপে বার্সার অনুপস্থিতি ফিফা এবং দর্শকদের জন্য নেতিবাচক। কারণ, এ মুহূর্তে বিশ্বের সেরা হিসেবে স্বীকৃত বার্সা উইঙ্গার লামিনে ইয়ামালের খেলা দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে। এ ছাড়া পেদ্রি, রবার্ট লেভানডফস্কি, রাফিনিয়াদের মতো তারকাদের খেলাও দেখার সুযোগ নেই এ টুর্নামেন্টে। একইভাবে লিভারপুল এবং আর্সেনালের তারকা ফুটবলারদেরও দেখা যাবে না ক্লাব বিশ্বকাপে।

ফিফা সিদ্ধান্ত অনুসারে, ২০২১ থেকে ২০২৪ সময়ের মধ্যে আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় যারা মহাদেশীয় ক্লাব প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, ২০২৫ ক্লাব বিশ্বকাপে তাদের জায়গা নিশ্চিত। এ নিয়ম অনুযায়ী, ২০২১ থেকে ২০২৪—এই চার বছরে চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী চেলসি (২০২১), ম্যানচেস্টার সিটি (২০২৩) ও রিয়াল মাদ্রিদ (২০২২ ও ২০২৪) ক্লাব বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে।

ইউরোপ থেকে যেহেতু ১২টি দল খেলবে ক্লাব বিশ্বকাপে, তাই তিনটি চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি জায়গা করে নেওয়ার পর বাকি ছিল আরও ৯টি দল। এই ৯টি দল নিশ্চিত হয়েছে উয়েফার অধীনস্ত ক্লাবগুলোর র‍্যাঙ্কিং সিস্টেম অনুযায়ী, যেখানে বিবেচনায় নেওয়া হয় গত চার মৌসুমের পারফরম্যান্স। একটি বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো, ক্লাব বিশ্বকাপে প্রতিটি দেশ থেকে দুটি দল অংশ নিতে পারবে, এই নিয়মও চালু করেছে ফিফা। স্পেন থেকে রিয়াল যেহেতু সরাসরি জায়গা পেয়েছে, তাই এই দেশ থেকে বাকি ছিল আর একটি দলের জায়গা। বার্সেলোনাকে পেছনে ফেলে জায়গাটি পেয়েছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। প্রশ্ন হলো কীভাবে?

উত্তর— ২০২২ ও ২০২৩ চ্যাম্পিয়নস লিগ গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে বার্সা। ২০২১ সালে শেষ ষোলো ও ২০২৪ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বাদ পড়ে কাতালান ক্লাবটি। আতলেতিকো ২০২১ সালে শেষ ষোলো থেকে বাদ পড়ে। ২০২২ সালে বাদ পড়ে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। ২০২৩ সালে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়লেও ২০২৪ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলে ডিয়েগো সিমিওনের দল।

অর্থাৎ ইউরোপে গত চার বছর পরিক্রমায় বার্সার চেয়ে শ্রেয়তর পারফরম্যান্স নিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে আতলেতিকো। উয়েফার নিয়ম অনুযায়ী বলা যায়, চার বছরের এই র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা ষষ্ঠ দল হিসেবে ক্লাব বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে মাদ্রিদের ক্লাবটি।

যেহেতু একটি দেশ থেকে সর্বোচ্চ দুটি জায়গা, ইংল্যান্ড থেকে এ দুটি টিকিট পেয়েছে চেলসি ও ম্যানচেস্টার সিটি। চেলসি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে ২০২১ সালে, সিটি ২০২৩ সালে। ইংল্যান্ড থেকে একটি দল গত চার বছরের মধ্যে একবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলে অন্য দলটি নির্ধারণ করা হতো উয়েফার র‍্যাঙ্কিং সিস্টেম অনুযায়ী।

কিন্তু সেটির দরকার হয়নি। যে কারণে আর্সেনাল, লিভারপুলের জায়গা হয়নি। উয়েফার চার বছরের র‍্যাঙ্কিং অনুসারে পিএসজি দ্বিতীয় সেরা আর ইন্টার মিলান চতুর্থ সেরা ক্লাব হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ক্লাব বিশ্বকাপে।

ফিফার কড়া নিয়ম এবং গত চার বছরের ইউরোপীয় পারফরম্যান্সের বিচারে জায়গা হয়নি বার্সেলোনা, লিভারপুল ও আর্সেনালের। তবে ফুটবলের মাঠে কিছুই চিরস্থায়ী নয়। পরের মৌসুমে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখালে, ভবিষ্যতের বিশ্বমঞ্চে আবারও দেখা যেতে পারে তাদের।