চীন সীমান্তে ভারতের বৃহত্তম বাঁধ, স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা

ভারতের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সিয়াং আপার মাল্টিপারপাস প্রজেক্ট
ভারতের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সিয়াং আপার মাল্টিপারপাস প্রজেক্ট © সংগৃহীত

চীন সীমান্তবর্তী অরুণাচল প্রদেশে ভারতের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প সিয়াং আপার মাল্টিপারপাস প্রজেক্ট নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি সেখানে ড্রিলিং যন্ত্রপাতি ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের পর উত্তেজনা আরো বেড়েছে। খবর নিক্কেই এশিয়ার।

স্থানীয় বাসিন্দা কেন্টু বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে সেনা ও যন্ত্রপাতি নিয়ে আসা হয়েছে। আমাদের কিছু না জানিয়ে আমাদের কৃষিজমির পাশেই সব বসানো হয়েছে। এখন শুধু অস্ত্রধারী বাহিনী আর মেশিন দেখি।’ 

প্রকল্পটির পেছনে ভারত সরকারের কিছু যুক্তি আছে। সেগুলো হলো-এটি পানি নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কৌশলগত উপস্থিতি নিশ্চিত করবে।
তবে স্থানীয়দের দাবি,  এটি তাদের জীবিকা, সংস্কৃতি ও অস্তিত্বের জন্য হুমকি।

স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কাছে সিয়াং নদী (ব্রহ্মপুত্র) শুধু পানি নয়, এটি মাদার সিয়াং অর্থাৎ জীবনের উৎস। তারা বাঁধের জায়গায় ধান, কমলা, বাঁশ চাষ করেন এবং নদীকে পবিত্র মনে করেন। দিবুত সিরাম নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, প্রকল্পটি অন্তত ৪২টি গ্রামে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলবে। যদি জনগণের মত নেওয়া হতো, তাহলে ৯৫ শতাংশ মানুষ বিরোধিতা করত।

আরও পড়ুন: ২৪২ জন নিয়ে লন্ডন যাচ্ছিল বিমানটি, উদ্ধার হচ্ছে একের পর এক লাশ

তবে ভারত সরকারের দাবি, ৭০ শতাংশ মানুষ প্রকল্পের পক্ষে। যদিও স্থানীয়রা এই দাবিকে মিথ্যা ও প্রতারণামূলক আখ্যা দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্পটি শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনের নয়, বরং চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধে ভারতের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান জোরদারের কৌশল। চীন যখন তিব্বতের মেডোগ এলাকায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঁধ প্রকল্প চালু করেছে, ভারত তখন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাল্টা পদক্ষেপ নিচ্ছে।

চীনা প্রকল্পে তারা প্রাকৃতিক ঢাল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, কিন্তু ভারতের বিশাল বাঁধ প্রকল্প পরিবেশগত ও কারিগরি দিক দিয়ে অযৌক্তিক বলে মত অনেকের।