প্রতিদিন সাইকেল চালালে কমে মানসিক চাপ, বাড়ে আয়ু
- ১৪ জুন ২০২৫, ১৭:৪৯
সাইকেল চালানো শুধু এক ধরনের ব্যায়াম নয়, এটি শরীর ও মনের জন্য এক অসাধারণ থেরাপি। আধুনিক জীবনযাত্রার ব্যস্ততায় অনেকেই সময় পান না আলাদা করে শরীরচর্চা করার। অথচ প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট সাইকেল চালালেই শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হতে পারে অনেকখানি।
মানসিক চাপ কমাতে সাইক্লিং
সাইকেল চালালে শরীরে এন্ডোরফিন নামের ‘হ্যাপি হরমোন’ নিঃসরণ হয়, যা মন ভালো রাখতে সহায়তা করে। এটি ব্যথার অনুভূতি কমায়, বিষণ্ণতা দূর করে এবং চাপমুক্ত থাকতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এটি কর্টিসলের মাত্রাও কমায়, যা মূলত স্ট্রেস হরমোন হিসেবে পরিচিত। শুধু তাই নয়, নিয়মিত সাইক্লিং মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাড়ায়। এতে মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে। ঘুমের মানও ভালো হয়, কারণ সাইকেল চালানোর মতো ব্যায়াম গভীর ঘুমে সহায়তা করে। যারা নিয়মিত সাইকেল চালান, তারা সহজেই ঘুমিয়ে পড়েন এবং ঘুমটাও হয় শান্ত ও টানা।
মননশীলতা বাড়ায়
সাইকেল চালানোর সময় চারপাশের প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি মনোযোগী হতে হয়। এটি চিন্তার গতি মন্থর করে এবং মননশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। একঘেয়েমি দূর হয়, মন ফুরফুরে থাকে।
দীর্ঘায়ু ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকর
জেএএমএ ইন্টারনাল মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, নিয়মিত সাইকেল চালালে আয়ু ক্ষয় কমে। গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রায় ৭ হাজার ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে দেখা গেছে, যারা নিয়মিত পাঁচ বছর সাইকেল চালিয়েছেন, তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা প্রায় ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। ফলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকিও অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘সুমিষ্টে সুস্থতা’-শরীর সুস্থ রাখতে যেভাবে ভূমিকা রাখে কাঁঠাল
ওজন কমাতে সহায়ক
প্রতিদিন আধা ঘণ্টা সাইকেল চালালে প্রায় ৩০০ ক্যালরি পর্যন্ত পোড়ে। বছরে প্রায় ১১ পাউন্ড বা ৫ কেজির মতো চর্বি কমানো সম্ভব। হাঁটাহাঁটি বা জগিংয়ের মতোই কার্যকর এই ব্যায়াম। তবে জগিংয়ের তুলনায় হাঁটু ও স্পাইনের ওপর চাপ কম পড়ে, তাই যারা বয়সে একটু বড় এবং হাঁটুর সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য সাইক্লিং আরও উপযোগী।
কীভাবে শুরু করবেন?
সাইকেল চালানো শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। শুরুতে সপ্তাহে দুই-তিন দিন ২০–৩০ মিনিট চালানো যেতে পারে, এরপর ধীরে ধীরে সময় ও গতি বাড়ানো উচিত। সাইকেল চালানোর সময় হেলমেট, নিপ্যাড ও এলবোপ্যাড পরা আবশ্যক। নিরাপত্তা ও সাইকেলের উপযুক্ততা নিশ্চিত করে নিয়মিত চালান।
সাইকেল চালানো শুধু একটি অভ্যাস নয়, এটি হতে পারে আপনার সুস্থ জীবনের চালিকা শক্তি। তাই আজ থেকেই শুরু হোক এই স্বাস্থ্যকর যাত্রা!