সীমান্তে চামড়া পাচারের শঙ্কা, কঠোর নজরদারিতে বিজিবি-পুলিশ

সীমান্তে কড়া পাহাড়া দিচ্ছে বিজিবি
সীমান্তে কড়া পাহাড়া দিচ্ছে বিজিবি © সংগৃহীত

কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে যশোরের রাজারহাট এলাকায় জমে উঠেছে চামড়ার ব্যবসা। তবে এ বছর পশুর সংখ্যা কমে যাওয়ায় চামড়ার নির্ধারিত দাম নিয়ে অসন্তোষ ব্যবসায়ীদের।

একদিকে লবণের মূল্যবৃদ্ধি এবং ট্যানারি মালিকদের দীর্ঘদিনের পাওনা পরিশোধে গড়িমসির কারণে তৈরি হয়েছে এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। এরই মধ্যে সীমান্ত এলাকায় চামড়া পাচারের আশঙ্কা প্রকট আকার ধারণ করেছে, এ কারণে কড়া নজরদারিতে নেমেছে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব।

রাজারহাট চামড়া মোকামে ২১ জেলার দুই শতাধিক আড়তদার যুক্ত থাকলেও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। প্রতিবছর ঈদের মৌসুমে এ মোকাম হয়ে ওঠে ব্যস্ততম বাণিজ্যকেন্দ্র। কিন্তু বাজারে পুঁজির সংকট, সরকারের ঘোষিত দাম বাস্তবে কার্যকর না হওয়া, এবং সিন্ডিকেটের কারসাজিতে হতাশ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

এই প্রেক্ষাপটে চামড়া পাচারের সুযোগ নিচ্ছে কিছু চোরাকারবারি, তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনে পাচারের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বেনাপোল, বাগআচড়া, শার্শা ও নাভারণ এলাকার একাধিক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, বৈধ ব্যবসায়ীরা মূলধনের অভাবে সংকটে পড়লেও পাচারকারীরা হাতে নগদ অর্থ নিয়ে চড়াদামে চামড়া কিনছে। এতে বৈধ বাজারপ্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে এবং পাচারের ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষ করে যশোরের শার্শা উপজেলার ১০২ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে যেসব এলাকা আগে থেকেই পাচার রুট হিসেবে পরিচিত, সেসব এলাকায় বিজিবি বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা নিয়েছে।

খুলনার ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ খুরশীদ আনোয়ার জানিয়েছেন, ইছামতি নদীসহ নদীপথে চামড়া পাচার ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত টহল দেওয়া হচ্ছে এবং বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

অন্যদিকে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি রাসেল মিয়া এবং শার্শা থানার ওসি কেএম রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় চামড়াবোঝাই যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রতিটি সীমান্তবর্তী পুলিশ ফাঁড়িকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকীও সীমান্তে তাদের বাহিনীর কড়া নজরদারির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পাচার রোধে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।