সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রনেতাদের ঈদ ভাবনা

শিক্ষার্থীদের ঈদ ভাবনা
শিক্ষার্থীদের ঈদ ভাবনা © টিডিসি

পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। সারা বিশ্বে দিনটি পালিত হয় মহাসমারোহে, সমবেত হয় আনন্দ, ত্যাগ ও মানবিকতার এক অদ্ভুত সমন্বয়ে। ঠিক এই সময়ে, যখন দেশজুড়ে মানুষ ঈদের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্রনেতারাও এক ভিন্নমাত্রার ভাবনায় ঈদকে মূল্যায়ন করছেন।

তাদের ঈদ ভাবনায় যেমন আছে ত্যাগ ও মানবিকতা, তেমনই আছে রাজনৈতিক সচেতনতা, সংস্কার এবং দেশের জন্য কাজ করার অঙ্গীকার। ঈদ মানেই শুধু উৎসব নয়—এটা হয়ে উঠেছে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের এক উপলক্ষ।

সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রুবেল বলেন, ঈদ মানেই আনন্দ, আর এই আনন্দ যেন সবার জন্য হয়। একে অপরের সঙ্গে ঈদ ভাগ করে নেব, প্রতিবেশী ও নিম্ন আয়ের মানুষের খোঁজ নেব। ঈদের পর সবাই মিলে যার যার জায়গা থেকে দেশের জন্য কাজ করব, দেশের কল্যাণে অবদান রাখব—এটাই হোক ঈদের বার্তা।

সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি নুরুন্নবী আকন্দ বলেন, ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত ঈদুল আজহা আমাদের শেখায় আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, আত্মত্যাগ এবং মানবপ্রেম। হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর স্মৃতি আমাদের অনুপ্রেরণা দেয় নিজের ভেতরের পশুত্ব ত্যাগ করে সহানুভূতির পথ বেছে নিতে। ঈদের দিনে গরিব-অসহায়দের প্রাপ্য নিশ্চিত করাটা আমাদের দায়িত্ব। এবারের ঈদ ঢাকাতেই করব এবং কলেজের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে একসাথে ঈদ উদযাপন করব ইনশাআল্লাহ।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি কাওছার আলী বলেন, ঈদের শুভেচ্ছা জানাই সকল শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের। ঈদ আমাদের শেখায় ত্যাগ ও সমন্বয়ের শিক্ষা। এ সময়ে সবাই যার যার এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে। ঈদের পর ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন এবং নতুন কমিটি প্রকাশ করা হবে। যেহেতু এটি বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময়, তাই নেতাকর্মীদের বেশি বেশি গাছ লাগানোর আহ্বান জানাচ্ছি। ব্যক্তিগতভাবেও আমি বৃক্ষরোপণ করছি এবং চালিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।

সোহরাওয়ার্দী কলেজ শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক লিখন ইসলাম বলেন, ঈদ সব পরিবারের জন্য আনন্দের দিন হলেও জুলাই বিপ্লবের শহীদ পরিবারগুলোর কাছে এই দিনটিও বিষাদের। ঈদের পর আমি অন্তত তিনটি শহীদ পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাবো। সাংগঠনিকভাবে আমরা সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি, যেন অন্তত একজন শহীদ বা গুরুতর আহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে ঈদের সময়ে সাক্ষাৎ করে তাদের পাশে দাঁড়ানো যায়।

ঈদ উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী কলেজের এসব ছাত্রনেতার ভাবনা শুধু উৎসব কেন্দ্রিক নয়, বরং সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ, রাজনৈতিক সচেতনতা, মানবিকতা ও দেশ গঠনের স্বপ্নে আবর্তিত। তাদের চোখে ঈদ কেবল আনন্দের নয়, বরং একটি বার্ষিক চর্চা—যেখানে মানুষ নিজেকে শুদ্ধ করে, সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথে হাঁটে।

যদি প্রতিটি মহল্লা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমন সচেতন নেতৃত্বে পরিচালিত হয়, তবে উৎসব হবে কেবল নিজের জন্য নয়, বরং সমাজের প্রতিটি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর এক প্ল্যাটফর্ম। ঈদের এই বার্তা হোক সকলের জন্য—ভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও নেতৃত্বের চর্চার নতুন এক সূচনা।