উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, সংঘর্ষ ঠেকাতে সেনা মোতায়েন ট্রাম্প প্রশাসনের
- ১০ জুন ২০২৫, ১৮:৫২
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর টানা দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তাল বিক্ষোভে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শহরটিতে ন্যাশনাল গার্ডের দুই হাজার সেনা মোতায়েন করছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও বিবিসি।
বিবিসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী নথিহীন অভিবাসীদের ধরতে গত শুক্রবার থেকে অভিযান শুরু করে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থা—আইসিই। এ অভিযান ঘিরে লস অ্যাঞ্জেলেসে শুরু হয় বিক্ষোভ, যা দ্রুত রূপ নেয় সহিংসতায়। সংঘর্ষের কারণে শহরের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে।
সহিংসতা ঠেকাতে ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেন। হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানায়, রাজ্যে অনাচার বেড়ে গেছে এবং আইসিই কর্মকর্তাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এসব কারণেই সেনা মোতায়েন জরুরি হয়ে পড়েছে।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং উস্কানিমূলক। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে শনিবার লস অ্যাঞ্জেলেসের দক্ষিণাঞ্চলে আবারও ফেডারেল এজেন্টদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী। পরিস্থিতি সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে।
শুক্রবার রাতেও শহরের বিভিন্ন এলাকায় আইসিই এজেন্টদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়। আইসিই যখন অভিবাসীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছিল, তখনই ওই সংঘর্ষ ঘটে। শুধুমাত্র শুক্রবারই ৪৪ জন অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সপ্তাহজুড়ে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১৮ জনে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ফেডারেল ডিটেনশন সেন্টারের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দেন, “মুক্তি দাও, মুক্তি দাও।”
হোয়াইট হাউজের বিবৃতিতে বলা হয়, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অপরাধীদের আটক করতেই এই অভিযান চালানো হচ্ছে এবং এটি বন্ধ করার কোনো সুযোগ নেই। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট নেতারা নাগরিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, সেনা মোতায়েন ও রাজনৈতিক বিরোধ—সব মিলিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেস বর্তমানে অভিবাসন ইস্যুকে কেন্দ্র করে গভীর অস্থিরতা ও উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে।