চীনা ভাষা শিক্ষা ও টেক্সটাইল খাতে দক্ষতা উন্নয়নে নর্থ সাউথে সেমিনার 

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনার © টিডিসি

চীন ও বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পে যৌথ সহযোগিতা ও দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (NSU) সিন্ডিকেট হলে ‘চায়না চেম্বার অব কমার্স ফর ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট অব টেক্সটাইলস’–এর সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রবিবার (১ জুন) অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে দুই দেশের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি শিক্ষাবিদ, সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী এবং এনএসইউ অ্যালামনাই অংশগ্রহণ করেন।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন চায়না চেম্বার অব কমার্স-এর টেক্সটাইল ডিরেক্টর মি. ওয়াং ওয়েইডং, এনএসইউ বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য মি. বেনজির আহমেদ ও মি. আজিজ আল কায়সার, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আবদুল হান্নান চৌধুরী, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেসুর রহমান, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের ডিন প্রফেসর ড. এ কে এম ওয়াঈরসুল করিম, কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের চীনা পরিচালক মিস মা শাওয়েন এবং স্থানীয় পরিচালক ড. বুলবুল আশরাফ সিদ্দিকী। এছাড়াও চায়না চেম্বার অব কমার্স-এর ২৩ জন প্রতিনিধি ও এনএসইউ-এর বিভিন্ন অনুষদের প্রধানরা অংশগ্রহণ করেন।

এসময় আলোচনায় চীনা ভাষা শিক্ষা টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পে স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়ন ঘটাতে পারে, চীনা বিনিয়োগের প্রসারে সহায়ক হতে পারে এবং দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ভিত্তি আরও মজবুত করতে পারে— এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। 

কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের স্থানীয় পরিচালক ড. বুলবুল আশরাফ সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতেই চীনা পরিচালক মিস মা শাওয়েন কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম ও ‘চাইনিজ + টেক্সটাইল’ পাঠ্যক্রমের অগ্রগতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ভাষা ও পেশাগত দক্ষতার সমন্বিত শিক্ষা পদ্ধতি এখন সময়ের দাবি, এবং ভবিষ্যতে আরও প্রাসঙ্গিক ও শিল্পখাত উপযোগী পাঠ্যক্রম প্রণয়ন করা হবে।’

উপাচার্য প্রফেসর আবদুল হান্নান চৌধুরী বলেন, ‘নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। ভবিষ্যতেও চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য প্রতিভা ও নীতিগত পরামর্শ প্রদান অব্যাহত থাকবে।’ তিনি এ বছর চীন-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সেমিনারটিকে একটি নতুন শিল্প-শিক্ষা অংশীদারত্বের সূচনা হিসেবে অভিহিত করেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে দৃঢ়। চীনা ভাষা শেখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের কর্মক্ষেত্রে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে পারবে।’ তিনি কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটকে এই খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন কোর্স চালুর আহ্বান জানান।

চায়না চেম্বার অব কমার্স-এর প্রতিনিধি মি. ওয়াং ওয়েইডং বলেন, ‘টেক্সটাইল হবে সংযোগের মাধ্যম এবং শিক্ষা হবে সেতুবন্ধন।’ তিনি পেশাগত শিক্ষা ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন এবং দক্ষিণ এশিয়ায় টেকসই সহযোগিতা গড়ে তোলার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

সেমিনারে অংশগ্রহণকারী ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অ্যালামনাই ‘ইন্টার্নশিপ ও কর্মসংস্থান’, ‘শিল্পখাতের চাহিদা’ এবং ‘প্রতিভা উন্নয়ন’ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনায় অংশ নেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালে চায়না চেম্বার অব কমার্স ফর ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট অব টেক্সটাইলস প্রতিষ্ঠিত হয়।  বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম জাতীয় টেক্সটাইল ও পোশাক খাতভিত্তিক সংগঠন। এর সদস্য সংখ্যা ১২,০০০-এর বেশি।