১১ দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান ধর্মঘট চাকরিপ্রত্যাশীদের
- ০৪ জুন ২০২৫, ২৩:১৭
সরকারী কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তত্ত্বাবধানে সব ধরনের চাকরিতে নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে, নম্বরসহ ফলাফল প্রকাশ এবং একইসঙ্গে একাধিক চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা এড়াতে মনিটরিং সেল গঠনসহ ১১ দফা দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার আলোকে আজ সোমবার (২ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘চাকরি সংস্কার আন্দোলন’ ব্যানারে এই অবস্থান ধর্মঘট অনুষ্ঠিত হয়।
অবস্থান ধর্মঘটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জালাল আহমদ বলেন, আমরা ২০১৩, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি ৫৬% থেকে ৭% এ নামিয়ে আনতে পেরেছি। কিন্তু কেবল কোটা সংস্কার বা বাতিল করলেই মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত হবে না। প্রতিটি নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফলেও স্বচ্ছতা থাকতে হবে। পুলিশ ভেরিফিকেশনেও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে ঘুষ ও দুর্নীতির কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীরা চাকরি পায় না। তাই বিসিএসসহ সব চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার নম্বরসহ ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। তাহলেই কেবল দুর্নীতির সুযোগ থাকবে না।
এছাড়াও অবস্থান ধর্মঘটে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক সরদার নাদিম মাহমুদ শুভ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ছাত্র বায়েজিদ খান উল্লাস, গণিত বিভাগের ছাত্র এম এ হানিফ নোমান, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মোহাম্মদ আলী, ন্যাশনাল লেবার পার্টির মুখপাত্র মো. শরীফুল ইসলাম এবং সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক মোস্তফা আল ইহযায প্রমুখ।
অবস্থান ধর্মঘট থেকে জানানো হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী ১১ জুন পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি বিরতি থাকবে। তবে অনলাইনে তাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে।
এ সময় অবস্থান ধর্মঘট থেকে চাকরিতে নিয়োগে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের জন্য তারা ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো— সব চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বজায় রাখতে নম্বরসহ ফলাফল প্রকাশ করতে হবে; সব চাকরির পরীক্ষায় মানসম্মত এবং ভারসাম্যপূর্ণ প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করতে হবে; পুলিশ ভেরিফিকেশনে জবাবদিহিতা নিশ্চিত এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে; নন-ক্যাডার বিধি-২০২৩ সংশোধন করে উত্তীর্ণ সবার চাকরির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে; প্রশ্নপত্রের সঠিক উত্তর ও কাট মার্ক ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে; দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে পিএসসি গঠন করতে হবে; একই দিনে একই সময়ে সমমানের একাধিক পরীক্ষা এড়াতে মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে; পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ‘মাইগ্রেশন স্টাইল’চালু করতে হবে; ভাইভার আগে ক্যাডার চয়েজ দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে; কম খরচে খাতা পুনঃনিরীক্ষণের সুযোগ দিতে হবে; ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিয়মবহির্ভূত ও ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ বাতিল করতে হবে।