কিশোরগঞ্জের হাওরবাসীর স্বপ্নপূরণ: মেঘনার বুকে ১ কিলোমিটারের সেতু

নির্মাণাধীন সেতুর পিলার
নির্মাণাধীন সেতুর পিলার © টিডিসি

কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত উপজেলা অষ্টগ্রামে মেঘনা নদীর ওপর এক হাজার মিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণকাজ চলছে পুরোদমে। সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার মানুষের যাতায়াতে সুফল বয়ে আনবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

সরেজমিনে জানা গেছে, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের অক্টোবরে। অর্থাৎ ২ বছর ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও সেতুর অর্ধেক কাজও হয়নি। তবে জমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে সেতুটির নির্মাণকাজ বিলম্ব হলেও বর্তমানে পুরোদমে কাজ চলছে। সেতুটির ২৬টি পিলারের মধ্যে ১৬টির কাজ শেষ হয়েছে। সবমিলিয়ে সেতুর ৩৫ শতাংশ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের শুরুর দিকে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা কর্তৃপক্ষের।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর ১৭৭ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার ১০৮ টাকা ব্যয়ে অষ্টগ্রামের বাংগালপাড়া মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর কাজ শুরু করে তমা কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের বাংগালপাড়া ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কয়েক গ্রামের মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে, তা হবে একটি মাইলফলক। 

অষ্টগ্রাম উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা শওকত হেসেন বলেন, ‘এই ব্রিজটি হওয়ার আগে আমরা যদি ঢাকা বা অন্য কোনো জেলায় যাইতে চাই, তাহলে ৩ ঘণ্টার জায়গায় ৫ ঘণ্টা লাগছে। আগে এখান থেকে বিশ্বরোড যাইতে ৩ ঘণ্টা লাগে। ব্রিজটি হলে ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগবে। এতে আমাদের অনেক সুবিধা হবে।’

আরও পড়ুন: ছাত্রদল ও বাম সংগঠনগুলোর কাছে আসা: কৌশলগত বন্ধুত্ব নাকি স্ববিরোধী অবস্থান?

উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই ব্রিজটি হলে আমাদের অনেক সুবিধা হবে। আমরা ভাটি অঞ্চলের মানুষ। আমরা একটি রোগী নিয়ে ৪-৫ ঘণ্টায় ঢাকায় যেতে হয়। ব্রিজটি হলে ২-৩ ঘণ্টা আমরা যেতে পারব। যাতায়াতের সুবিধা হলে আমাদের হাওরের ধানের ন্যায্যমূল্য পাব।’

অষ্টগ্রাম উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ রেজাউল হক এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘সেতুর কাজ চলমান। জমি অধিগ্রহণ জটিলতা ও স্থানীয় লোকজনের বাধায় কিছুটা বিলম্ব হলেও এখন দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। আশা করি আগামী বছরের শুরুর দিকে কাজ সম্পন্ন হবে।’

কিশোরগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অষ্টগ্রামের বাংগালপাড়ায় ১ কিলোমিটার সেতুর কাজ বর্তমানে এগিয়ে চলছে। এ সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতের বড় একটি মাধ্যম হবে। জেলা শহর ও হাওর অঞ্চলের মানুষ রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায় সহজে যাতায়াত করতে পারবেন৷ ফলে হাওরের কৃষিপণ্য ও মিঠাপানির মাছের ন্যায্যমূল্য পাবেন হাওরবাসী।