স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় প্রতিদিনের যেসব অভ্যাস
- ০৬ জুলাই ২০২৫, ১৬:৫৪
প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারান ব্রেইন স্ট্রোকে। বাংলাদেশেও এই রোগের প্রকোপ দিনে দিনে বেড়েই চলছে। অথচ জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন আনলেই এই ভয়ংকর রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।
কীভাবে হয় স্ট্রোক
স্ট্রোক তখনই ঘটে, যখন মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় বা কোনো অংশে রক্ত জমাট বেঁধে তা বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই অংশের কোষগুলো মারা যায়। ফলে দেখা দিতে পারে শরীরের একপাশ অবশ হয়ে যাওয়া, কথা জড়িয়ে আসা, চোখে ঝাপসা দেখা, ভারসাম্য হারানো বা তীব্র মাথাব্যথা। কখনো কখনো তা মৃত্যুও ডেকে আনে।
কোন অভ্যাসগুলো বাড়ায় ঝুঁকি
অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস
ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ও ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার রক্তে কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ বাড়ায়। গবেষণা বলছে, স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব।
শরীরচর্চার অভাব ও অলসতা
দিনের পর দিন এক জায়গায় বসে থাকা, হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম না করাও স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। এতে স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে, যা স্ট্রোকের পথ প্রশস্ত করে।
ধূমপান
ধূমপান সরাসরি হৃদ্যন্ত্র ও রক্তনালির ক্ষতি করে। এতে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে, ধমনীর স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়। এমনকি, পরোক্ষ ধূমপানও মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত মদ্যপান
নিয়মিত বা অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ রক্তচাপ অনিয়ন্ত্রিত করে তোলে এবং রক্তনালির স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।
ওবেসিটি বা অতিরিক্ত ওজন
মেদবহুল শরীর মানেই কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের উচ্চ ঝুঁকি। আর এই তিনটি হলো স্ট্রোকের প্রধান ‘ট্রিগার’।
সচেতনতার অভাব
নিজের শরীরের লক্ষণকে উপেক্ষা করা যেমন: মাথাব্যথা, ভারসাম্যহীনতা বা কথা জড়ানোকে গুরুত্ব না দেওয়াও ভয়াবহ হতে পারে। বিশেষ করে যারা উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাদের জন্য নিয়মিত চেকআপ ও সাবধানতা অত্যন্ত জরুরি।
কী করবেন ঝুঁকি কমাতে
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা হালকা ব্যায়াম করুন, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন, ধূমপান ও মদ্যপান পুরোপুরি বাদ দিন, স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন বা পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন, নিয়মিত রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা করুন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোলজিস্ট ডা. মাহমুদা হক বলেন, ‘স্ট্রোক কোনো হঠাৎ ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা নয়। এটা ধীরে ধীরে শরীরে গড়ে ওঠে। তবে সচেতন হলে এর অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।’