‘আজহারের মুক্তি-ছাত্রদলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে বিভিন্ন ক্যাম্পাস সংঘর্ষমুখী হচ্ছে’
- ৩০ মে ২০২৫, ১৬:৪৭
শিক্ষাঙ্গনে সহিংসতা ও চলমান সংকটে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। ছাত্র সংগঠনটি বলছে, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিবিৃরের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি এটিএম আজহার ইসলামের যুদ্ধাপরাধ মামলায় মুক্তি পাওয়াকে কেন্দ্র করে ও ছাত্রদলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে একটি মনস্তাত্ত্বিক ও সংঘর্ষমুখী পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আজহারপন্থী এবং বামপন্থী সংগঠনগুলোর মধ্যে উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সাথে সংঘর্ষে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বামপন্থীদের কর্মসূচিতে বাধা প্রদান, উসকানিমূলক আচরণ ও সহিংস হামলা আমাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রদল ধারাবাহিকভাবে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংগঠিত, গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের ওপর সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা, হুমকি এবং সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি তিতুমীর কলেজ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ ও রাজধানীর উত্তরখানসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা দেখা যায়। এক্ষেত্রে বেশিরভাগই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ভুক্তভোগী হন। এরই সর্বশেষ নজির সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক, লিখন ইসলামের ওপর ছাত্রদলের সশস্ত্র হামলা। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ছাত্রদলের এমন সন্ত্রাসবাদী আচরণকে তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা সহকারে প্রত্যাখ্যান করে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ছাত্রশিবির অতীতে নিপীড়নের শিকার হলেও, বর্তমানে তাদের ভিন্নমত মেনে চলতে অক্ষমতা এবং নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে গুপ্ত দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের অপচেষ্টা গ্রহণযোগ্য নয়। বিশেষ করে সাম্প্রতিক চট্টগ্রামে নারী শিক্ষার্থীদের উপর তাদের নেতাকর্মীদের দ্বারা সংঘটিত বর্বর হামলা অতীব জঘন্য। এই ঘটনার দায় শিবির এড়াতে পারে না। আমরা তাদের গুপ্তচর রাজনীতি ও দায় এড়ানোর সংস্কৃতি থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই।’’
‘‘অন্যদিকে, বাম ঘরনার কিছু দায়িত্বশীল ব্যক্তি অতীতে ট্যাগ দিয়ে চালানো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডকে যৌক্তিকতা দিতে গিয়ে আবরার ফাহাদ হত্যাকে ন্যায্যতা দেওয়ার অপচেষ্টা করছেন, যা ঘৃণ্য ও নিন্দনীয়। রাজনৈতিক ভিন্নমত থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু কাউকে শুধুমাত্র দলীয় পরিচয়ের কারণে হত্যাযোগ্য করে তোলার যে রাজনীতি আমরা অতীতে দেখেছি, তা আজও চলমান থাকায় আমরা গভীরভাবে শঙ্কিত। ট্যাগিং এর রাজনীতি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।’’
বিবৃতিতে বলা হয়, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ বিশ্বাস করে, শিক্ষাঙ্গন কখনোই উগ্রবাদ, সন্ত্রাস ও প্রতিহিংসার জায়গা হতে পারে না। মত-পথের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও সকল ছাত্রসংগঠনের উচিত একে অপরের অধিকারকে সম্মান করা এবং একটি শান্তিপূর্ণ, যুক্তিভিত্তিক, প্রগতিশীল শিক্ষানির্ভর সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখা।