ভোলায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত
- ৩০ মে ২০২৫, ১১:১৫
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পর ভোলায় ভোর থেকে শুরু হয় দমকা হাওয়ার সঙ্গে টানা ভারি বৃষ্টি। এতে করে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপকূলীয় বেড়িবাঁধে ধস নামে এবং বহু এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমউদ্দিন বাজারসংলগ্ন বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে আশপাশের জনপদ। বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার কলাতলী এলাকায়ও বেড়িবাঁধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তজুমদ্দিন উপজেলার শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ায় লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে বসতঘর ও কৃষিজমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।এছাড়াও লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙনে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো মেরামতে তাৎক্ষণিকভাবে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে এবং অন্যান্য বাঁধগুলোকেও সতর্ক নজরদারিতে রাখা হয়েছে। নদী ও সাগর উত্তাল থাকায় জেলার সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের সব ধরনের লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ইলিশা নৌবন্দরের বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন জানিয়েছেন, প্রবল বাতাসে ইলিশা টার্মিনালের চালা উড়ে গেছে এবং পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নৌযান চলাচল স্থগিত থাকবে।
জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে ভোলায় ৮৬৯টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ১৪টি মাটির কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দুর্যোগপূর্ব, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ-পরবর্তী—এই তিনটি ধাপে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১৩ হাজার ৮০০ স্বেচ্ছাসেবী, ৯৭টি মেডিকেল টিম এবং বিভিন্ন সংস্থার সহায়তা টিম।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জরুরি সহায়তা হিসেবে মজুত রাখা হয়েছে ২৯১ মেট্রিক টন চাল, দেড় হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও পাঁচ লাখ টাকার শিশু খাদ্য। সব সরকারি কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করে উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষ সরিয়ে আনার কাজ চলছে।
ভোলা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ২৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।