ঢাবি ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যাকাণ্ডে জড়িত মাদকচক্র, আসামির স্বীকারোক্তি
- ২৮ মে ২০২৫, ০১:০৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী এবং এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক এসএম শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডে মাদকচক্র জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে আসামির স্বীকারোক্তিতে।
গত ১৩ মে রাত ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন ছাত্রদল নেতা সাম্য। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন তার বড় ভাই শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পর ডিবি পুলিশ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে একাধিক আসামিকে গ্রেফতার করে। ১৪ মে শেরেবাংলা নগর থানা এলাকা থেকে মো. তামিম হাওলাদার, পলাশ সরদার ও সম্রাট মল্লিককে গ্রেফতার করা হয়। প্রথম দফায় তাদের ছয় দিনের ও দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
আরও পড়ুন: গবেষণায় ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকা পাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা
পরবর্তীতে গ্রেফতার করা হয় মো. রিপন, সোহাগ, হৃদয় ইসলাম, রবিন ও সুজন সরকারকে। সোহাগ, হৃদয় ও রবিনের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলেও আদালত দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। সুজন সরকারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে ২৬ মে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমানের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামি মো. রিপন স্বীকার করেন, সাম্যকে সুইচ গিয়ার দিয়ে হত্যা করা হয় এবং এতে মাদক ব্যবসায় জড়িত দুটি পৃথক গ্রুপ অংশ নেয়। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি ৫ থেকে ৭ জন অংশ নেয়, যাদের মধ্যে দুজন সাম্যকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে এবং বাকিরা পাহারায় ছিল।
জবানবন্দি অনুযায়ী, হত্যার পর প্রধান অভিযুক্তকে মোটরসাইকেলে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মন্দির গেটে পৌঁছে দেয় রিপন। সেখান থেকে আরেকটি দল তাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় এবং পরে তারা কক্সবাজারে পালিয়ে যায়। আদালত রিপনের জবানবন্দি গ্রহণ করে এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সাম্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ছাত্রদল ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করে, যার মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন। তারা দ্রুত বিচার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্লিপ্ত ভূমিকার প্রতিবাদে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ শিগগিরই, কমতে পারে আসন
এদিকে সাম্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করেছে। গত সোমবার (২৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।
তদন্তের প্রতিবেদনের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘রিপোর্ট সিন্ডিকেট মিটিংয়ে খোলা হবে। এছাড়া এভাবে বলার নিয়ম নেই।’
পুলিশের সংবাদ সম্মেলন আজ
ছাত্রদল নেতা এসএম শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানাবেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
সকালে ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঢাবি শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যা মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছে।