বিদেশে উচ্চশিক্ষা: রেফারেন্স লেটার কী
- ২৪ মে ২০২৫, ১৮:৪৯
স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি নথি হচ্ছে রেফারেন্স লেটার। বাইরের দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই কমপক্ষে দুইটি ‘রেফারেন্স লেটার’ বা সুপারিশপত্র জমা দিতে হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক রেফারেন্স লেটার কী, রেফারেন্স লেটারে কী লেখা থাকে—রেফারেন্স লেটারের ধরন কেমন হয়।
রেফারেন্স লেটার বা সুপারিশ পত্র হল একটি চিঠি বা তৃতীয় পক্ষের দেওয়া ব্যক্তিগত চারিত্রিক সনদ, যেখানে কোনো ব্যক্তি ইতিবাচক পদ্ধতিতে অন্য ব্যক্তির দক্ষতা ও প্রশংসাপত্রগুলো মূল্যায়ন করে থাকে। রেফারেন্স লেটারের লেখককে রেফারি বলা হয় এবং একজন রেফারি সাধারণত একজন শিক্ষক, অধ্যাপক, সুপারভাইজার, বস, বা চিঠিতে উল্লেখ করা ব্যক্তির সঙ্গে সংযুক্ত যে কেউ হতে পারেন। বাইরের দেশে স্কলারশিপ পেতে অথবা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার মতোই রেফারেন্স সমান গুরুত্বপূর্ণ।
রেফারেন্স লেটারে কী লেখা থাকে—
রেফারেন্স লেটারে আপনার নিজের সম্পর্কে সবকিছু উল্লেখ করতে হবে। আপনার ভালো দিকগুলোর পাশাপাশি সীমাবদ্ধতার বিষয়েও উল্লেখ করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে একটি কৌশল অবলম্বন করা যায়। কখনো কখনো খারাপ দিকের মধ্যেও একটা ভালো দিক লুকিয়ে থাকে। যেমন ধরুন, রেফারি লিখলেন: ‘ওর সবই ভালো, কিন্তু কাজের বেলায় ও খুব খুঁতখুঁতে। তাই কাজ শেষ হতে দেরি হয়, ’কিংবা ‘ও জয়ের নেশায় এতই মশগুল যে পরাজয় মানতে পারে না’—এ ধরনের বাক্যে কিন্তু আদতে আপনার প্রশংসাই করা হচ্ছে!
আরও পড়ুন: জেনে রাখুন বিশ্বসেরা ২৯ স্কলারশিপের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট
রেফারেন্স লেটার চারটি অংশে লিখতে হবে। প্রথম অংশ হলো রেফারি আপনাকে কীভাবে চেনেন? তিনি যদি আপনার শিক্ষক হন, তাহলে যোগ হতে পারে কেন আপনার কথা তার মনে আছে, এত ছাত্রছাত্রীর মধ্যে আপনি আলাদা কেন? তিনি আপনাকে কত দিন ধরে চেনেন? এ রকম কিছু দিয়ে শুরু করার পর আপনার ভালো দিকগুলো স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে হবে। এখানে আপনার দক্ষতার দিকগুলো ছাড়াও অন্যান্য সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমের কথাও উল্লেখ থাকতে পারে। রিসার্চ কোর্সে আবেদন করলে অবশ্যই এই অংশে আপনার গবেষণা নিয়ে দু-একটি বাক্য থাকা দরকার। পরের অংশে আপনার দু-একটি দুর্বলতার জায়গা (ইতিবাচকভাবে) উল্লেখ করা যেতে পারে। আর সবশেষে তিনি জোরালোভাবে উল্লিখিত পদ/বিষয়/প্রোগ্রামের জন্য আপনার নাম সুপারিশ করবেন।
কীভাবে জমা দেবেন—
এই বিষয়টি নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয় অথবা স্কলারশিপ কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর। আপনাকে তাদের চাহিদা মত ফরমটে নির্ধারিত নিয়মে রেফারেন্স লেটার জমা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনাকে রেফারেন্স লেটারটি আগে থেকেই স্বাক্ষরসহ স্ক্যান করে রাখতে হবে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় বা স্কলারশিপ কমিটি নিজেরাই আপনার রেফারির সঙ্গে যোগাযোগ করে রেফারেন্স লেটার চেয়ে নেবে। এ ক্ষেত্রে আপনি আবেদনের সময় শুধু রেফারির নাম, পদবি, ই-মেইল ও ফোন নম্বর উল্লেখ করবেন।
আরও পড়ুন: বিদেশে উচ্চশিক্ষা: সাশ্রয়ী খরচ ও সহজে ভিসা সুবিধা প্রাপ্তিতে আদর্শ ৮ দেশ
জেনে রাখুন—
*রেফারির ই-মেইল আইডি অবশ্যই ‘অফিশিয়াল’ হতে হবে। জিমেইল কিংবা ইয়াহু ছাড়া যদি আর কোনো ই-মেইল আইডি না থাকে, তবে তাকে রেফারি না রাখাটাই সমীচীন;
*কাজ হয়ে গেলে রেফারিকে ধন্যবাদ জানাতে ভুলবেন না;
*নিজের একটি সিভি রেফারিকে দিয়ে রাখতে পারেন, যেন লেখার সময় তিনি আপনার সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন;
*আপনি হয়তো একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করছেন। একজন রেফারিকে বারবার বিরক্ত না করে বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে একাধিক রেফারির নাম উল্লেখ করতে পারেন;
*কখনো কখনো শিক্ষকদের ‘টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টরাও এ ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রাখেন। শিক্ষককে বারবার বিরক্ত না করে আপনি টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্টের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন।