জকসু ছাড়া গণতন্ত্র বিকল—জানালেন জবি শিক্ষার্থীরা

জকসু নিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আলোচনা সভা
জকসু নিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আলোচনা সভা © ফাইল ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে—‘আমাদের কণ্ঠস্বর কোথায়?’ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের অনুপস্থিতি আজ সেই কণ্ঠস্বরকে নিঃশব্দ করে রেখেছে। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, জবি শাখা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শিক্ষার্থীরা আবারও তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, ‘জকসু ছাড়া গণতন্ত্র বিকল।’

‘জকসু কি, কেনো ও কিভাবে?’—এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে আজ বুধবার (২১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা একে একে তুলে ধরেন জকসুবিহীন ক্যাম্পাস জীবনের বঞ্চনা, অসহায়ত্ব ও দখলদারিত্বের বাস্তব চিত্র। সভায় অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সাধারন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইস উদ্দিন বলেন, জকসু না থাকার সুযোগে প্রশাসন একক কর্তৃত্ব চালিয়েছে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়াই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার জায়গা তৈরি হয়েছে।

ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির আহমেদ বলেন, একটি নির্বাচিত ছাত্র সংসদ ছাড়া শিক্ষার্থীদের চাহিদা কিংবা সমস্যা তুলে ধরা কার্যত অসম্ভব। এটা শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জবি শাখার আহ্বায়ক ইভান তাহসিফ বলেন, জকসু ছাড়া আমরা আরেকটা একক আধিপত্যের ছাত্র রাজনীতিকে ঠেকাতে পারব না। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরাই নিজেদের প্রতিনিধিকে নির্বাচন করুক, যাতে তাদের কণ্ঠস্বর বাস্তবায়নের সুযোগ পায়।

ছাত্রদল জবি শাখার সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ছাত্র সংসদ হচ্ছে নেতৃত্ব তৈরির চারণভূমি। আমাদের মতাদর্শ ভিন্ন হলেও সহাবস্থান রক্ষার সংস্কৃতি ছাত্র সংসদ ছাড়া গড়ে তোলা অসম্ভব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ বলেন, ছাত্র সংসদ শুধু প্রতিনিধি নয়, এটা ভবিষ্যতের রাজনীতিকদের গড়ে তোলে। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন পর্যন্ত ছাত্র সংসদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ জবি শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, ১৮ হাজার শিক্ষার্থীর কোনো নির্বাচিত কণ্ঠস্বর নেই। এ অবস্থায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দাবি জানানো দুরূহ। কার্যকর ছাত্র সংসদ ছাড়া গণতন্ত্রের চর্চা অসম্ভব।