ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার লাইব্রেরিতে এসে মুগ্ধ বিদেশি দুই গবেষক
- ২১ মে ২০২৫, ০৭:২১
ঢাকার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে গবেষণা করতে এসে মুগ্ধ হয়েছেন দুই আন্তর্জাতিক গবেষক—ড. থমাস নিউবল্ড ও ড. শাহিন পিশবিন। মঙ্গলবার (২০ মে ২০২৫) তারা লাইব্রেরির দুর্লভ পাণ্ডুলিপি ও সমৃদ্ধ সংগ্রহ ঘুরে দেখেন এবং গবেষণায় ব্যস্ত সময় কাটান।
এই দুই গবেষকই নিজ নিজ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত। তারা বাংলা অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি, আরবি-ফারসি-উর্দু সাহিত্য এবং ইসলামি শিক্ষার প্রাচীন পাণ্ডুলিপি নিয়ে গবেষণা করছেন। তাদের মতে, এই লাইব্রেরির সংরক্ষিত দুর্লভ পাণ্ডুলিপি দক্ষিণ এশিয়ার সাংস্কৃতিক ও বৌদ্ধিক ঐতিহ্য অনুধাবনের এক অনন্য উৎস।
ড. থমাস নিউবল্ড একজন ইতালীয় নাগরিক। বর্তমানে তিনি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। ড. শাহিন পিশবিন ইরানের নাগরিক এবং বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কুইন্স কলেজে পোস্টডক্টরাল গবেষক হিসেবে গবেষণা করছেন। তারা মূলত আরবি, ফারসি, উর্দু ও ইতিহাসনির্ভর সাহিত্যের পাণ্ডুলিপি নিয়ে কাজ করছেন।
ড. নিউবল্ড বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শহিদুল হাসান আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী লাইব্রেরির বিষয়ে জানান এবং তিনি নিজেই আমাদের এখানে নিয়ে আসেন। লাইব্রেরিতে প্রবেশ ও গবেষণার অনুমতি দেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আশরাফুল কবির।”
ড. শাহিন পিশবিন জানান, “আমরা সাহিত্যের পাণ্ডুলিপিগুলো বেশি অধ্যয়ন করেছি। এখানে না এলে কখনোই জানতাম না যে বাংলাদেশে এমন সমৃদ্ধ একটি লাইব্রেরি আছে। পরিবেশ অত্যন্ত শান্ত, পরিপাটি এবং গবেষণার জন্য আদর্শ। সময় পেলে ভবিষ্যতেও এখানে আবার আসার ইচ্ছা আছে।”
ড. নিউবল্ড বলেন, “এখানে এমন অনেক পাণ্ডুলিপি রয়েছে যা আন্তর্জাতিক গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস, ইসলামি শিক্ষা ও সাহিত্য, আরবি-ফারসি সংস্কৃতি বিষয়ে যারা কাজ করছেন, তাদের জন্য এটি এক অমূল্য ভাণ্ডার।”
নতুন গবেষকদের জন্য বার্তা দিয়ে ড. শাহিন পিশবিন বলেন, “গবেষণা শুধু তথ্য সংগ্রহ নয়, এটি এক অনুসন্ধানী যাত্রা। নতুনদের প্রতি আমার পরামর্শ—স্থানীয় ও আঞ্চলিক উৎসগুলোকে গুরুত্ব দাও। আধুনিক বইয়ের পাশাপাশি প্রাচীন পাণ্ডুলিপির মধ্যেই ইতিহাসের গভীর ও মূলসূত্র লুকিয়ে থাকে। যতটুকু সম্ভব এসব পাণ্ডুলিপির সঙ্গে পরিচিত হও।”