জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন-ক্যাম্পাসের তৃতীয় ব্যাচের ভর্তি বিজ্ঞপ্তির দাবি, আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় © সংগৃহীত

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন-ক্যাম্পাস অনার্স প্রোগ্রাম বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে অভিযোগ করে দ্রুত তৃতীয় ব্যাচের ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তা না হলে প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা শিগগিরই আমরণ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

রোববার (১৮ মে) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন-ক্যাম্পাস অনার্স প্রোগ্রামের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেনের সই করা সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে ইসমাইল হোসেন বলেন, ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের বৃহত্তর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী আজ চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধানে মূল ক্যাম্পাসে শ্রেণি কার্যক্রমসহ মডেল ক্যাম্পাস করার অনুমতি থাকলেও নির্দিষ্ট কিছু মহল, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল প্রতিষ্ঠাকাল (১৯৯২ সাল) থেকেই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সংবিধানের ৪১(১) এ মূল ক্যাম্পাসে শ্রেণি কার্যক্রমসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো মডেল ক্যাম্পাস চলমান রাখার স্পষ্ট বিধান রয়েছে। কিন্তু তা থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়নি কোনো কর্তৃপক্ষ বরং এটাকে ধামাচাপা দিয়ে স্তব্ধ করে রাখা হয়েছিল যুগের পর যুগ, যা খুবই নিন্দনীয় এবং দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

শিক্ষার্থীদের জীবন এখন অনিশ্চয়তায়, এমনটা মন্তব্য করে ইসমাইল বলেন, যা-ই হোক, ২০২৩ সালে ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থীদের গাজীপুর মূল ক্যাম্পাসে অ্যাডমিশন শুরু করা হয় চারটি অনুষদের। সেই চার অনুষদ হলো আইন, ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, নিউট্রেশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্স ও ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজম্যান্ট। এর পরের সেশন ২০২৩-২৪-এ একইভাবে দ্বিতীয় ব্যাচ অন-ক্যাম্পাসে ভর্তি করানো হয়। তবে তাতেও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের। অসংখ্যবার আন্দোলন-সংগ্রাম এবং ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে প্রথম ব্যাচ দ্বিতীয় ব্যাচকে ক্যম্পাসে নিয়ে আসে। একইভাবে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিভিন্ন রকমের টালবাহানা শুরু করেছে অনেক দিন আগে থেকেই। তারা চায় শুধু দুইটা ব্যাচকে পড়িয়ে তারা প্রোগ্রাম বন্ধ করে দেবে এবং সেই মোতাবেক তারা পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে, যা চরম ভোগান্তি ও অনিশ্চয়তা বয়ে নিয়ে এসেছে অন-ক্যাম্পাস অনার্স প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের জীবনে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই আত্মহত্যা করার চিন্তাও গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা চাই অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে তৃতীয় ব্যাচের ভর্তির বিজ্ঞপ্তি যাতে প্রকাশ করা হয় এবং এ বিষয়ে দ্বিমত করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন-ক্যাম্পাস অনার্স প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীরা খুব শিগগিরই আমরণ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করবে।

প্রত্যাশা রেখে ইসমাইল হোসেন বলেন, সুতরাং দেশবাসীকে আমাদের দিকে সজাগ ও সদয় দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি এবং আমাদের এই ন্যায্য দাবিকে আপনারা সমর্থন জানিয়ে আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করবেন, এই আহ্বান করি। বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংগ্রামী ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, জুলাই বিপ্লবের রক্ত শুকাতে না শুকাতেই আমাদের সঙ্গে এ অন্যায় আপনারা কেউ সহ্য করবেন না, এই প্রত্যাশা করি।

এ বিষয়ে জানার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ এস এম আমানুল্লাহকে কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ দিলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া দুজন উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে ফোন দিলে তারাও ফোন ধরেননি।