ইবি শিক্ষক হাফিজের শাস্তি ফের পর্যালোচনায়
- ১৬ মে ২০২৫, ১৫:১৬
ছাত্রীদের যৌন হয়রানি এবং ছাত্রদের সমকামিতায় বাধ্য করার অভিযোগসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাতিল এবং এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ২৬৬তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
তবে বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই শাস্তিকে পর্যাপ্ত মনে না করে হাফিজুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার দাবি জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।
শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় হাফিজুল ইসলামের শাস্তি পুনরায় পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে সিন্ডিকেট সদস্য ও ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ড. আশরাফুর রহমানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাতে ক্যাম্পাসে আসছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
ডিআইজি আশরাফুর রহমান শুক্রবার (১৬ মে) সকাল ১০টায় রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের গগন হরকরা মিলনায়তনে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ২০১৭-১৮ থেকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সব শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে সভায় উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক বলেন, "ডিআইজি আশরাফুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে হাফিজুল ইসলামের বিষয়ে বিভাগের শিক্ষার্থীদের বক্তব্য শুনবেন এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করবেন।"
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীদের ‘নষ্টা’ ও ‘বাজারের মেয়ে’ বলে গালিগালাজ, কথা না শুনলে নম্বর কেটে দেওয়া, ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে ফোন করে বিরক্ত করা, ভুয়া আইডি থেকে কুরুচিপূর্ণ বার্তা পাঠানো এবং ছাত্রদের সমকামিতায় বাধ্য করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন এবং উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে ২৭ দফা অভিযোগ দাখিল করেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় প্রশাসন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও শিক্ষার্থীরা তা পর্যাপ্ত মনে না করে হাফিজের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখে।