লং মার্চে জবির ছয় শিক্ষক আহত, ফেসবুকে সমালোচনার ঝড়
- ১৫ মে ২০২৫, ১৭:২১
তিন দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবন যমুনা অভিমুখে লংমার্চ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজার, হাইকোর্ট মোড় ও মৎস ভবনে মোড়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিউট পার হলে কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড় থেকেই পুলিশ টিয়ারশেল ও জলকামান নিক্ষেপ করে। এমনকি শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষক, সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। এ ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করে সমালোচনা করছেন নেটিজনরা।
আজ বুধবার (১৪ মে) বেলা ১১টার দিকে কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড় ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের মাঝামাঝি জায়গায় শিক্ষার্থীদের ওপর বলপ্রয়োগ করে।
রাজ আহমেদ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শ্রদ্ধেয় নাসির স্যার, যিনি ছাত্রদের প্রতিটি আন্দোলনে সবার আগে বুক-পিঠ পেতে দিয়েছেন বু-লে-ট,বে-য়-নে-ট এর সামনে। হয়েছেন লাঞ্ছিত ও ক্ষত-বিক্ষত কিন্তু ঠেকানোর সাধ্য আছে কার? ২০১৪ সালে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ঘাম ঝরিয়েছেন আর ২০২৫ সালেও থামানো যায়নি ছাত্র বান্ধব, পিতৃতুল্য এই শিক্ষককে।’
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতেও সড়ক ছাড়েননি জবি শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
জুলােই আন্দোলনের শহীদ সাজিদের শিক্ষক, সহপাঠী, বন্ধুদের ওপর হামলার ঘটনায় কঠোর সমালোচনা করেছেন লতিফুল ইসলাম নামে এক সংবাদকর্মী।
জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের বল প্রয়োগ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন অনিমা রয়। তিনি লেখেন, ‘জবি শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করছি! হল ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক দাবি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।’
এম এ উমায়ের নামে এক সহকারী জজ, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হওয়া এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে, তাদের দাবি সাথে থাকার সমর্থন প্রকাশ করেছেন। তিনি ফেসবুকে লেখেন ‘সংগ্রাম অথবা মৃত্যু’।
আহত ছয় শিক্ষক হলেন, ইসলামিক স্টাডিজের বিভাগের অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দীন আহমদ, শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি ও ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নইম সিদ্দিক ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিফাত হাসান।
আরও পড়ুন: যমুনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
আহত সাংবাদিকরা হলেন, জবি প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদক আসসাইফ সুবর্ণ, জবি সাংবাদিক সমিতির সেক্রেটারি ও ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদক মাহতাব লিমন। দৈনিক সংবাদের ক্যাম্পাস প্রতিবেদক মেহেদী হাসান।
এ ছাড়াও অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন ঢামেক পুলিশের ইনচার্জ মো. ফারুক।
এদিকে শিক্ষার্থীরা জানান, আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকিদের কেউ কেউ ফার্মেসি, অন্যান্য হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-
আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করা; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা।