যমুনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে আলোচনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন জবি ভিসি
প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে আলোচনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন জবি ভিসি © টিডিসি ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চলমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী আন্দোলন, পুলিশি হামলা এবং তিন দফা দাবির প্রেক্ষাপটে আজ বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে আলোচনার উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন।

এর আগে সকাল ১১টায় ‘জুলাই ঐক্য’র ব্যানারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশ্যে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি শুরু করেন। মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিতভাবে টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড, গরম পানি ও লাঠিচার্জ চালায়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সহকারী প্রক্টর ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন। গুরুতর আহত অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসিরউদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক বেলাল, সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমন, ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিনিধি সোহানুর রহমান এবং দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান।

বিকাল ৩টার পর আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান নেন। বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দেন, “আমাদের শিক্ষক ও ছাত্রদের উপর যে বর্বর হামলা হয়েছে, তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।”

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, “সরকারের এই অমানবিক আচরণে আমরা মর্মাহত। আমার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের রক্ত ঝরেছে, শতাধিক আহত হয়েছে। এর বিচার চাই।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, “আমার সহকারী প্রক্টরের ওপর পর্যন্ত পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে এমন বর্বর হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে যাওয়া হবে না।”

এসময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠেন—“জেগেছেরে জেগেছে জবিয়ান জেগেছে”, “আমার ভাই অনাহারে যমুনা কী করে”, “ইন্টারিম জবাব চাই”, “এসেছি যমুনায়, যাবো না খালিহাতে।”

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো-১. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, ২. ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাঁটছাট না করে অনুমোদন, ৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন

বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও অনুষদের ডিন ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

এদিকে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথ ছাড়বেন না। এখন আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই বৈঠকের ফলাফলের ওপর।